৫৪ বছরেও দেশে টেকসই স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। শেষ নেই সংকটের। চিকিৎসার ব্যয়ের ৬৪ ভাগই যায় ব্যক্তির পকেট থেকে। অথচ দেশে সরকারি হাসপাতাল প্রায় সাতশ। স্বাস্থ্যখাতে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম বরাদ্দ বাংলাদেশে। তারপরও, প্রতি বছর বাজেটের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ অর্থ খরচ করতে পারে না স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নতি না হওয়ার পেছনে অনেকে কম অর্থ বরাদ্দকে দায় দেন। কিন্তু বরাদ্দ যা দেয়া হয় তা কি পুরোটা কাজে লাগাতে পারে স্বাস্থ্য বিভাগ? পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার কোটি টাকা। খরচ করা গেছে মাত্র ২২ হাজার কোটি। ২০২১ সালে ৭ হাজার কোটি ও ২০২০ সালে ফেরত গেছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। দূরদর্শী নেতৃত্ব, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবসহ বেশিকিছু কারণে প্রতিবছর বাজেটের একটা বড় অংশ ফেরত যায়। অথচ স্বাস্থ্যখাতে সংকটের শেষ নেই। টাকার অভাবে ব্যাহত হয় অনেক সেবা।
এর কারণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, আমাদের প্রক্রিউরমেন্ট রুল এবং প্রক্রিউওরম্যান্ট অ্যাক্ট স্বাস্থ্য খাতের জন্য সুবিধাজনক নয়। স্বাস্থ্য খাতের যারা ম্যানেজার তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়নি। কারণ তারা ডাক্তার থেকে ম্যানেজার হয়েছেন তাদের স্পেশাল কোনো ট্রেনিং হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এবারের বাজেটে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেয়া হয়েছে। বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিতে আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে চার হাজার কোটি টাকা। কিন্তু স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে তেমন কিছু বলা হয়নি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন জানান, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের কাজ বেশ আগেই শুরু হয়েছে। নগর স্বাস্থ্যসেবা, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিস্তৃত করা, জনস্বাস্থ্যের নতুন কাঠামো তৈরি করা স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের এসব কিছুরই প্রতিফলন এই বাজেটে নেই।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা। যা গত বছরের চেয়ে ৫০১ কোটি টাকা বেশি। বাজেট সংশোধনের সময় এই বরাদ্দ না কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।