সবশেষ কবে বিশ্বকাপ জিতেছিলো ব্রাজিল? ২২ বছর আগে! ২০০২ সালের বিশ্বকাপের আসরে সবশেষ চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। নতুন শতাব্দীর প্রথম চ্যাম্পিয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন কারণে সেই আসর স্মরণীয় হয়ে আছে সেলেসাওদের। এরপর সময় গড়ালেও সোনালী ট্রফিটি আর ছুঁয়ে দেখা হয়নি ব্রাজিলের। বিশ্বের বিভিন্ন লিগে দেশটির ফুটবলাররা দাপট দেখালেও হেক্সা মিশনে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে তাদের।
বৈশ্বিক যেকোনো ফুটবল টুর্নামেন্টেই হট ফেবারিট হিসেবেই থাকে ব্রাজিলের নাম। অসাধারণ প্রতিভা ও ফুটবল শৈলীর কারণে বিশ্বজুড়ে ফুটবলার তৈরির আঁতুরঘর বলা হয় দেশটিকে। যুগে যুগে পেলে, রোনালদো, রোনালদিনহো, কাকা, নেইমার কিংবা হালের ভিনিসিয়ুস সেই পরিচয়ই বহন করে আসছেন। বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলে দেশটির অর্থনীতিতে বড় একটি অবদান রাখছেন ফুটবলাররা।
অথচ এত এত ফুটবলীয় মেধা থাকার পরও সবশেষ বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফিটি সেই ২০০২ সালে ছুঁয়ে দেখেছিল সেলেসাওরা। প্রায় দুই যুগ সময় পার হলেও ফাইনালের মঞ্চে আর উঠে দেখা হয়নি পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। তাই বিশ্বকাপ এলেই হেক্সা মিশনের হাঁক-ডাক বেড়ে গেলেও ফাইফার ছেড়ে আর বের হতে পারছে না লাতিন আমেরিকার দেশটি।
বিশ্বকাপের ১৭তম সংস্করণে সবশেষ ব্রাজিল জিতলেও নানা কারণে তা স্মরণীয় হয়ে আছে সেলেসাওদের কাছে। প্রথমবারের মতো এশিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই আসরে নতুন শতাব্দীর প্রথম চ্যাম্পিয়ন খুঁজে পায় ফুটবল বিশ্ব। শুধু তাই নয় যৌথভাবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপ আয়োজন করে নতুন কীর্তি গড়ে তারা। ইয়োকোহামার নিসান স্টেডিয়ামে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে ঐ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল।
প্রায় ৭০ হাজার দর্শকের সামনে টানটান উত্তেজনার ফাইনালটি মাতিয়ে রাখে ব্রাজিল ও জার্মানি। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর আক্রমণের ধার বাড়ায় সেলেসাওরা। খেলার ৬৭ ও ৭৯ মিনিটে গোল আদায় করে দলকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন রোনালদো নাজারিও। ফাইনালে তার অসামান্য নৈপুণ্যেই জামার্নিকে হারিয়ে পঞ্চম শিরোপা জেতে ব্রাজিল। সেই সাথে ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে টানা তিন আসরে ফাইনাল খেলা কাফু গ্রহণ করেন শিরোপা।
বিশ্বকাপজুড়ে গোলবার আগলে রাখলেও ফাইনালে আর নিজের সেরাটা দিতে পারেননি অলিভার কান। দল হারলেও তার অনবদ্য পারফরমেন্সের কারণে গোল্ডেন গ্লাভসের পাশাপাশি গোল্ডেন বলও জেতেন এই গোলরক্ষক। যদিও সেই আসরের পর পরিবর্তন আসে গোল্ডেন বল পুরস্কারের। আর ৮ গোল করে গোল্ডেন বুট নিজের দখলে নেন রোনালদো। এই আসর দিয়েই ভাঙে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের সরাসরি অংশ্গ্রহণের প্রথা।
২০০২ সালের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলটা আজও আবেগে ভাসায় সেলেসাওদের। আক্রমণভাগে রোনালদো-রিভালদোদের সাথে নিজের জাত চেনান রোনালদিনহো। পাশাপাশি রবার্তো কার্লোসের ট্রেডমার্ক ফ্রি কিক স্মৃতির পাতায় এখনও জমতে দেয়নি ধুলো। লুসিও-এডমিলসনদের শক্ত রক্ষণের সাথে গোলরক্ষক মার্কোসের নিবেদন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ব্রাজিলের ফুটবলে।
এসবই সত্য। কিন্তু স্বপ্নের হ্ক্সো মিশন কবে বাস্তবে ধরা দেবে ব্রাজিল ভক্তদের?