খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি; তিন জেলা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, এখানকার মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৮ লক্ষ। যাদের মধ্যে অর্ধেকে’র বেশি বাঙালি, ৯ লাখ ২২ হাজার। বাকি ৯ লাখ ২০ হাজার বিভিন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর।
মাঝে মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিলেও দীর্ঘ সময় একসঙ্গে বসবাস এই পাহাড়ি-বাঙালিদের। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, নানা ধরনের সংঘাত-সহিংসতা। যাতে উদ্বেগ বাড়ছে উভয় জনগোষ্ঠির মাঝে।
একজন প্রবীণ নারী জানান, পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এখন ভয় লাগছে। আরেকজন মধ্যবয়সী বলেন, বর্তমানে, বাজারে যেতে চাই না। কারণ- পরিস্থিতি থমথমে দেখে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থতির কারণ জানতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফ’র এক সমন্বয়কের সাথে যোগাযোগ করে । নিরাপত্তা কৌশল অবলম্বন করে তার কাছে পৌছাতে নির্দেশনা দিতে থাকেন অংগ্য মারমা।
দীর্ঘ যাত্রা শেষে ইউপিডিএফ’র সমন্বয়ক ও মুখপাত্র অংগ্য মারমা বললেন, এই আন্দোলন যদি সর্বোচ্চ জায়গায় যায় এবং সরকারকে যথার্থ চাপ সৃষ্টি করা যায়, বিশেষকরে, পার্বত্য চট্টগ্রামের চুক্তি ও এখানকার জনগণের রাজনৈতিক অধিকারের বিষয়ে; তাহলে এই সরকার (যেটি আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে আসা সরকার)-কে কিছু-না-কিছু হলেও বাস্তবায়ন করতে হবে।
আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী, কোন গোষ্ঠিকে আদিবাসি বলা হলে স্বায়ত্বশাসন দিতে হয় তাদের। যা বাংলাদেশের সংবিধান বহির্ভূত। এই আদিবাসি শব্দকে এনজিও টার্ম বলে উল্লেখ করেন অংগ্য মারমা। তবে তারা চাচ্ছেন, এক দেশে দুই আইন।
অংগ্য মারমা বলেন, সাধারণ মানুষ মনে করছে, আদিবাসী হলে আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী, তাদের ভূমি অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার দিতে হবে। সেক্ষেত্রে, স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল করে দিতে হবে।
এক দেশে দুই আইন চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এই অঞ্চল-ও একটি প্রতিষ্ঠান। যেটাকে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। সংবিধান তৈরি করতে হবে।
ইউপিডিএফ সমন্বয়কের দাবি, পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে শান্তি চান তারা। দীর্ঘদিনের সম্প্রীতি ধরে রাখতে, প্রয়োজনে বৈঠকে-ও বসতে চান সরকারের সাথে।