পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের সূত্র ধরে কক্সবাজার কলাতলীস্থ তারকা হোটেল সায়মান বিচ রিসোর্টের ভেতর একটি গলিতে টাকা গুনে নিচ্ছেন একদল যুবক-তরুণ। এদের মাঝে রয়েছেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহদাত হোসেন রিপনও। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ নিয়ে চারদিকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগের পরে একইরূপে ফিরছে বিএনপি। তবে, রিপনের দাবি কর্তৃপক্ষের আহ্বানে হোটেলে রক্ষা করতে গিয়েছিলেন তারা।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতির শাহদাত হোসেন রিপন বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের গণবিপ্লবে ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রদল। তীব্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর সমগ্র দেশে লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরই অংশ হিসেবে কক্সবাজারেও একটি চক্র বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, আগুন লাগানোর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। যেখানে ছাত্রদলের কোন সম্পৃক্ততা নেই, বরং শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে কক্সবাজারে নৈরাজ্য প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রদল। আমি নিজে শহরে সড়কে সড়কে মাইকিং করেছি। সারাদিন ক্লান্ত হয়ে রাত নয়-দশটার দিকে আমি বাসায় ফিরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাত এগারোটার দিকে হোটেল সায়মান কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আমাকে ফোন করা হয়। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয় ছাত্রদলের নাম ভাঙ্গিয়ে কয়েকটি গ্রুপ চাঁদাবাজি করতে হোটেলে গেছে। চাঁদা না দিলে হোটেলে ভাঙচুর করার হুমকি দিচ্ছে। এই খবর পাওয়ার পর আমি ছাত্রদলের জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে হোটেলে যাই এবং হোটেল কর্তৃপক্ষকে আশ্বস্ত করি এরা কেউ ছাত্রদলের নেতাকর্মী নয়। রাতের অন্ধকারে আমরা দেখতে পাই কলাতলীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৫/৬ জন করে কয়েকটি গ্রুপ অবস্থান করছে। তাদের চেনাও যাচ্ছে না। তারপরও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হোটেলটি রক্ষা করেছি। সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের ভূমিকা সম্পর্কে অবগত রয়েছে।’
জেলা ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ‘একটা স্টার হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকে, আমরা এতটা বোকা না ক্যামেরার নিচে গিয়ে চাঁদাবাজি করবো, এতটা মূর্খ আমরা না। হোটেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ হয়ে নির্দ্বিধায় আমরা কাজগুলো করছি। একমাস পর ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা করা মানে একটি ষড়যন্ত্র। আমরা কক্সবাজারে সামাজিক অনেক কাজ করছি বলে এমন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘পাঁচ আগস্ট আমি নিজেই টিম ভাগ করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দিয়ে এসপি ও ডিসি অফিস রক্ষায় ভূমিকা রেখেছি। পরে ছাত্রদের সাথে মিলেমিশে ছাত্রদল কর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছে, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে।’
তার দাবি, মূলত একটি চক্র ছাত্রদলের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি আমার ‘চরিত্র হনন’ করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায় টাকা পরখ করতে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, কোন সদুত্তর দেননি তিনি।
অন্যদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যুবক ও তরুণদের টাকা গোনার স্থলে সায়মন বিচের আসাদ নামের এক কর্মকর্তাকেও দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি হোটেল কর্তৃপক্ষ।