রাত থেকে কয়েক জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হয়েছে। ফলে অনাহারে- অর্ধাহারে দিন পার করছেন নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলার কয়েক লাখ মানুষ।
ফেনীর সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঁইঞার বন্যা পরিস্থিতির এখনও উন্নতি হয়নি। এ উপজেলাগুলোর সবকটি ইউনিয়নই নিমজ্জিত। পরশুরাম, ফুলগাজী আর ছাগলনাইয়া থেকে পানি নামায় বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে ক্ষত। প্রত্যন্ত এলাকায় দেখা দিয়েছে ত্রাণ সংকট। অবশ্য পানি নেমে যাওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের হিসাবে, এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমান ফেনী সদর ও সোনাগাজী, দাগনভূঁইঞা’র ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দী।
নোয়াখালীতে রাত থেকেই দফায় দফায় বৃষ্টি হয়। মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণে সেনবাগ, সোনাইমুড়ি, চাটখিল উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়া বিরাজমান রয়েছে। এদিকে, মেঘনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে হাতিয়ার ঘাসিয়ার চর, নিঝুম দ্বীপও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেই ত্রাণ সরবরাহ। এখন পর্যন্ত জেলায় পানিবন্দি ২১ লাখেরও বেশি মানুষ।
এদিকে, লক্ষ্মীপুরেও রাতভর মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পৌর শহর’সহ জেলার ৫ উপজেলাই এখনও জলমগ্ন। স্থানীয়রা বলছেন, শনিবার (২৫ আগস্ট) নোয়াখালীর স্লুইসগেটের ২৩টি রেগুলেটর খুলে দেয়া হয়। সেই পানি লক্ষ্মীপুরের নদী-খাল হয়ে মিশবে সাগরে। উপচে পড়া জল মেঘনাসহ আশপাশের খাল-বিলে জমেছে। এর সাথে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কুমিল্লাতেও। নতুন করে তলিয়েছে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকা। পানিবন্দি অবস্থায় আছেন এই অঞ্চলের লক্ষাধিক বানভাসী মানুষ। চৌদ্দগ্রাম, বুড়িচং ও নাঙ্গলকোটের পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হলেও লাকসাম, মনোহরগঞ্জ এখনও জলমগ্ন। নৌযান নিয়ে বিজিবি’সহ অন্যান্য বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা ত্রাণ সরবরাহ করে যাচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।