লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুরে সড়কে চলাচল করা সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ হয়েছে। গত ৫ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন সিএনজি স্ট্যান্ডে চালকদের কাছ থেকে কেউ চাঁদা আদায় করতে আসেনি। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন চালকরা।
সরেজমিনে লালপুর ত্রি-মোহনী চত্বর ঘুরে জানা যায়, লালপুর থেকে প্রতিদিন বাঘা, ঈশ্বরদী, বনপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত চারশতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করে। এসব স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন নামে দৈনিক চাঁদা তোলা হতো। আওয়ামী লীগ নেতাদের ইন্ধনে সিএনজি সমিতির প্রভাবশালী নেতারা এসব চাঁদাবাজির নেতৃত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন তারা। এরপর শিক্ষার্থীরা সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করাসহ তদারকি শুরু করলে কাউকে চাঁদা তুলতে দেখা যায়নি।
জানা গেছে, সকল যান রেজিস্ট্রেশনবিহীন হওয়ায় এবং সমিতিতে নতুন গাড়ি ভর্তি করানোর জন্য তিন থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হত চালকদের। তবে এসব বিষয়ে নিরাপত্তার অভাবে কেউ মুখ খুলেন না। এর মাঝে গণমাধ্যম ও প্রশাসনের তৎপরতায় সড়কে মাঝেমধ্যে চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও স্ট্যান্ডগুলোতে চেইন মাস্টারের নামে চাঁদা উত্তোলন করা হত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনন্ত ৫ সিএনজি চালক জানান, অনেক কষ্টে বিভিন্নভাবে জমানো টাকা দিয়ে বা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সিএনজি, অটোরিকশা কিনেছেন। কিন্তু তা সড়কে নামাতে গিয়ে সমিতিতে ভর্তি, মাসে অনন্ত ৩শ টাকা চেইন মাস্টারের চাঁদা, এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় গেলে বাড়তি চাঁদা দিতে হয়। কিন্তু ৪শত যান থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা উঠলেও কোনদিন কেউ সড়ক দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চালকদের কল্যাণে এক টাকাও ব্যয় করতে দেখা যায়নি। তবে এখন স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি না হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে তাদের মধ্যে।
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের লালপুর উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মোত্তালেব রায়হান ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালপুর উপজেলার সম্বনয়ক আব্দুল্লাহ বাকি বলেন, আমরা চাই সড়কে চাঁদাবাজি চিরদিনের জন্য বন্ধ হোক। যারাই এর সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের আইনের আওতায় আনা দরকার। আর ভবিষ্যতে যদি কেউ আবারও চাঁদাবাজিতে জড়িত হয় তাদের অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। নইলে তাদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, সড়কে কেউ কোনো ধরনের চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।