

হুমায়ুন কবীর রিন্টু, নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল সদর উপজেলার কেডিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর পরিবার প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলামকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে নড়াইল সদর থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলামের বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের বোড়ামারা গ্রামে।
অভিযোগে জানা যায়, গত ১৫ অক্টোবর বিকেলে বিদ্যালয় ছুটির পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ৪ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন। একপর্যায়ে এক ছাত্রী তার মায়ের ডাকে ওই কক্ষের বাইরে গেলে শিক্ষক অন্য দুই ছাত্রকে তখন জাতীয় পতাকা খুলতে পাঠান। এরপর সুযোগ বুঝে একা থাকা শিক্ষার্থীকে রুমে আটকে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীর চিৎকারে অন্য সহপাঠীরা ছুটে এসে দরজা খুলে ফেলে। এসময় প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম তড়িঘড়ি করে মেয়েটিকে ছেড়ে দেন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের কাউকে কিছু না বলার জন্য অনুরোধ করেন। বিষয়টি পরিবার ভয়ে ও সামাজিক সম্মানের আশঙ্কায় চুপ ছিলেন। তবে ঘটনাটি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পরে জানতে পারেন। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষক স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে নড়াইল সদর থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করলে বিষয়টি সর্বত্র ছড়িযে পড়ে। অভিযুক্ত শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
জানা গেছে, তিনি ১৬ অক্টোবর থেকে ৭ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের মাগুরা কালুখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। চলতি বছরের আগস্ট থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনা জানাজানি হতেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর সহপাঠীরা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ঘটনার পুরো বিবরণ তুলে ধরে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরিকুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে এ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম এ ঘটনায় মামলা হওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন, আসামি গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

