রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: রাউজানের প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এক সহযোগীসহ যুবদল নেতা আরফাত মামুনকে (৪৯) গ্রেপ্তার করেছে রাউজান থানা পুলিশ।
বুধবার (৫ মার্চ) ভোর রাতে রাউজান থানাধীন বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীবুল্লাহ পাড়া পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এই সময় তাদের কাছ একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় বন্দুক ও ৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত যুবদল নেতা আরফাত মামুন রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গরীবুল্লাহ পাড়া আবু আহমেদের ছেলে। তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের ব্রাহ্মণহাটে গোলাম আকবর খন্দকারের সমর্থনে যুবদল নেতার পরিচয়ে তার একটা তোরণ রয়েছে। তবে দলীয় সূত্রে জানা যায়, তার কোন দলীয় পদ পদবী নেই। গ্রেপ্তারকৃত তার সহযোগী হলেন বিপ্লব বড়ুয়া (৩৫)। তিনি উপজেলার পূর্বগুজরা ইউনিয়নের হোয়ারাপাড়া গ্রামের তেজন্দ্র লাল বড়ুয়ার ছেলে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর দেড়টা) তারা রাউজান থানা হেফাজতে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন ডিউটি অফিসার এএসআই জুয়েল চন্দ্র বিশ্বাস।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আসাদ আলী মাতব্বর পাড়ায় জুমার নামাজ আদায় ও বাবা-মায়ের করব জেয়ারত করতে আসার পথে চাকতাইয়ের শুটকি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ্যে দিবালোকে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়। এই ঘটনার ১০ দিন পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে মো. মাকসুদ আলম বাদী হয়ে ২৫/৩০ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্য এই মামলায় রমজান আলী ও গিয়াস উদ্দিন নামের দুই জন কারাগারে রয়েছে। তবে, এখনও এই হত্যাকাণ্ডের কোন রহস্য উদঘাটন হয়নি।
এই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) রাসেল পিপিএম বলেন, দুইজনকে আমরা আটক করেছি। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে, অভিযান শেষে তদন্ত সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃত মামুনের বিরুদ্ধে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি প্রবাসী হুমায়ন কবিরকে অস্ত্রের মুখে বাড়ি হতে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, গত ২৭, ২৮ ডিসেম্বর ও ৪ জানুয়ারি যথাক্রমে জিয়া বাজার, লাম্বুর হাট ও পথেরহাটে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সমাবেশ থেকে ফেরার পথে বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মারধর, গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং গত ২০ আগস্ট গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশ থেকে ফেরার পথে মিয়া মার্কেট এলাকায় বিএনপির কয়েকজন কর্মীদের মারধরসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।