রাজধানীতে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি ডিবি গুলশান) ইফতেখার মাহমুদ ৬দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার কাছে রেখে আসা ইস্যুকৃত অস্ত্র ফিরিয়ে আনতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পুলিশের এই কর্তার সন্ধান চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছেন তার স্ত্রী সাবা তাহসিন। চিঠিতে তার স্বামীকে খুঁজে দিতে পুলিশ বিভাগকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ইফতেখার মাহমুদ বাড্ডা থানায় এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। সরকার পতনের খবরের পর সারা দেশে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে কোনো রকম প্রাণ বাঁচিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ইফতেখার। তখনো তার কাছে ইস্যুকৃত-অস্ত্র ছিল। পরবর্তীতে ৬ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তার কাছে আশ্রয় নেন। বিমানবাহিনীর ফ্যালকন টাওয়ার থেকে ১১ আগস্ট তিনি বাসায় ফিরে আসেন। তার আগে ইস্যুকৃত অস্ত্রটি (স্কোয়াড্রন লিডার) আবদুল্লাহ ইবনে আলতাফের হেফাজতে রেখে আসেন।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তীতে অফিসের কার্যক্রম শুরু হলে ১২ আগস্ট অস্ত্রটি ফেরত নেওয়ার জন্য আবদুল্লাহ ইবনে আলতাফকে অনেকবার মোবাইল ফোনে কল এবং মেসেজ দেন। কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দেননি। একদিন পর একটি মাধ্যমে জানতে পারেন, অপ্রত্যাশিত ঘটনা বসত এই বিমানবাহিনীর অফিসার হাউস অ্যারেস্ট রয়েছেন। তখন ইফতেখারের ইস্যুকৃত অস্ত্রটি আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের কাছে থাকার কারনে চিন্তিত হন তিনি। পরবর্তীতে ১৭ আগস্ট অস্ত্র হারিয়ে যাওয়ার বিষয় উল্লেখ্য করে তেজগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ইফতেখার।
এরপর ২২ আগস্ট একটি ফোনকল আসায় ইফতেখার বাসা থেকে গাড়ির চালকসহ বেরিয়ে যান। এরপর চালক তাকে পুরোনো বিমানবন্দর তেজগাঁও বিমানবাহিনীর সদর দপ্তরে নামিয়ে দিলে একজন এসে তাকে ভেতরে নিয়ে যান। এরপর থেকে তার ব্যক্তিগত মোবাইলে অফিশিয়াল নম্বরসহ কোথাও পাওয়া যায়নি। সব ধরনের যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তিনি। কোথাও খোঁজ না মেলায় পুলিশ কমিশনারের শরণাপন্ন হন বলে জানান তিনি।
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, তার স্ত্রীর চিঠি পেয়েছেন। তারা ইফতেখারের বিষয়ে যোগাযোগ করারও চেষ্টা করছেন। যতটুকু জানতে পেরেছেন ইফতেখার ভালো আছে। নিরাপদ স্থানেই আছে। দুই একদিনের মধ্যে তাকে ফিরে পাবেন বলে আশা করেন তিনি।
তবে ইফতেখারের স্ত্রী সাবা তাহসিন বলেন, ‘অন্যবাহিনীর লোকজন তার স্বামীকে এভাবে রেখে দিবে। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে যোগযোগ করতে দেবে না। এটা কোনো দেশের আইন হতে পারে না।’
সূত্র: আজকের পত্রিকা