মেট্রোরেলের নতুন একক যাত্রার টিকিটের নকশা বদল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এ অবস্থায় রোববার (১০ নভেম্বর) এই নকশা বদলের ব্যাখ্যা দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
আগের নকশায় থাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় সংসদ ভবন এবং জাতীয় ফুল শাপলার ছবি নতুন নকশা থেকে বাদ দেয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার তৈরি হয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করছেন— ওই ছবিগুলো ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক।
তবে এ বিষয়ে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলছে, কোনও উদ্দেশ্য নয়, মূলত ‘বিভ্রান্তি এড়াতে’ একক যাত্রার টিকিটের নকশায় বদল আনা হয়েছে।
ডিএমটিসিএল জানায়, মূলত যাত্রীদের সুবিধার জন্য একক যাত্রার টিকিট এবং এমআরটি টিকিটের যাত্রীদের মধ্যকার বিভ্রান্তি দূর করা এবং যাত্রী ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু করার জন্য জন্য একক যাত্রার টিকিটে পরিবর্তন আনা হয়। এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া গত সরকারের আমলে শুরু হয় এবং ডিজাইন চূড়ান্ত হয় ও সরবরাহ আদেশ প্রদান করা হয়।
কোম্পানির ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে ডিএমটিসিএল-এর পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ৩ লাখ ১৩ হাজার একক যাত্রার টিকিট এবং ৮ লাখ ২৫ হাজার ৫০০টি এমআরটি পাস (স্থায়ী) ছাড়া হয় যাত্রীদের জন্য। কিন্তু একক যাত্রার টিকিট এবং এমআরটি পাসের ডিজাইন একই ধরনের হওয়ায় যাত্রী সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
ফেসবুক পোস্টে আরও বলা হয়, এমআরটি পাসধারী যাত্রী এক্সিট গেটে কার্ড টাচ করে বের হন এবং একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রীকে টিকিট এক্সিট গেটের স্লটে প্রবেশ করাতে হয়। উভয় কার্ডের ডিজাইন একই রকম হওয়ায় একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রী এমআরটি পাসধারী যাত্রীকে অনুসরণ করে। একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রী টিকিটটি এক্সিট গেটের স্লটে প্রবেশ না করিয়ে টাচ করায় এক্সিট গেট এলার্ম প্রদান করে এবং সাময়িক সময়ের জন্য অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে এক্সিট গেটে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
ডিএমটিসিএল জানায়, ইতোমধ্যে ২ লাখেরও বেশি একক যাত্রার টিকিট হারিয়ে গেছে। একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রী টিকিটটি স্লটে জমা না দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় ডিজাইন একই রকম হওয়ায় এক্সিট গেটে কর্তব্যরত ব্যক্তি একক যাত্রার টিকিটধারীকে বাধা দিতে বিভ্রান্ত হন এবং এতে যাত্রী হয়রানিসহ জটিলতার সৃষ্টি হয়।
এছাড়া একক যাত্রার টিকিট এবং এমআরটি পাসের মধ্যে পার্থক্য করার জন্যে ইতোপূর্বে ৫০ হাজার একক যাত্রার টিকিটের রঙ পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু তাতেও সুফল পাওয়া যায়নি। একক যাত্রার টিকিটের পরিমাণ কমে যাওয়ায় নতুন টিকিট সংগ্রহের এবং ডিজাইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। এ অবস্থায় ডিএমটিসিএল ২০ হাজার একক যাত্রার টিকিট জাপানের সনি কোম্পানি থেকে তৈরি করে এনেছে। গত সোমবার স্টেশনগুলোতে নতুন টিকিট ছাড়া হয়।