৭২ সালের 'মুজিববাদী' সংবিধান বাতিল এবং রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বুধবার রাত সোয়া ৭টায় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন ঐক্যের ডাক দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, কোন রাজনৈতিক দল যদি আমাদের জাতীয় ঐক্যে না আসে তাহলে আমরা তাদেরকে বাদ দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্য গড়ে তুলে ফ্যসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে তার সমাধান করবো। আমরা এখনো বঙ্গভবনে এখনো স্বৈরাচারদের দেখতে পাচ্ছি। আমরা দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে এই বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিচ্ছি।
রাষ্ট্রপতি কে হবে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, এ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সুতরাং তা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান হোক। যাকে সবাই পছন্দ করবে, গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট অনুযায়ী যে কাজ করবে সে-ই রাষ্ট্রপতি হবে।
রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা কোনো গোলটেবিল বৈঠক চাই না। আমরা রাজপথে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছি। তাই কোনো রাজনৈতিক দল না আসলেও জনগণকে সাথে নিয়ে সংবিধান ও রাষ্ট্রপতির ইস্যুতে আমরা রাজপথে সমাধান করবো।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের নির্মূল করা হয়নি। যতদিন পর্যন্ত দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ সমূলে নিশ্চিহ্ন না হলে ততদিন পর্যন্ত নির্বাচনের প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ৭২ সালের মুজিববাদী সংবিধানের ফলেই স্বৈরাচারের জন্ম হয়েছে। ফলে এই সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে গণ অভ্যুত্থানের স্পিরিট বাড়াতে হবে। গণঅভ্যুত্থান এর পরে এই ৭২ এর সংবিধান থাকতে পারে না। যারা স্বৈরাচার বিরোধী এক দফায় বিশ্বাসী ছিলো তাদের কেউ এই সংবিধানকে সমর্থন করতে পারে না। সকল রাজনৈতিক দলকে একত্রিত হয়ে নতুন সংবিধান লিখতে হবে। যে সংবিধানের ফলে কোন স্বৈরাচারী ব্যবস্থা পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না৷
তিনি বলেন, বঙ্গভবনের সামনে গতকাল যে আন্দোলন হয়েছে সেই আন্দোলনকে সমর্থন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কিন্তু দাবি আদায়ে তাদের প্রক্রিয়া সমর্থন যোগ্য না। সবাইকে বলবো বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলন না করে একত্রিত হয়ে জোরালোভাবে আন্দোলন করুন।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের আলটিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ একটি জঙ্গি সংগঠন। কিন্তু এখনো তারা বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করছে। ঢাবিতেও তারা মুখোশ পড়ে মিছিল করেছে। আপনারা যেখানেই তাদেরকে দেখবেন আপনারা নৈতিক জায়গা থেকে তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করবেন। এসময় তিনি, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মনজুর আল মতিন, আরিফুল ইসলাম আদিব, উমামা ফাতেমা, আব্দুল হান্নান মাসুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।