গত জানুয়ারিতে সৌদি ক্লাব আল হিলাল ছেড়ে সান্তোসে যোগ দেন নেইমার। শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত ক্লাব তো বটেই, নিজের পেশাদার ক্যারিয়ারের শুরুটা এখানেই করেছিলেন এ ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। তার প্রত্যাবর্তনে খুশির জোয়ার বয়ে যায় ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বের শহরটিতে। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ বিরতির আগে ব্রাজিলিয়ান লিগে ক্লাবগুলো খেলবে দুটি করে ম্যাচ। এর মধ্যে একটিতে গতকাল রাতে খেলতে নেমেছিল সান্তোস। তবে এ ম্যাচে হাত দিয়ে গোল করতে গিয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন ৩৩ বছর বয়সী এ সেলেসাও তারকা। তার এই কাণ্ডকে অনেকেই দিয়োগো ম্যারাডোনার ‘হ্যান্ড অব গড’-এর সঙ্গে তুলনা করছেন, তবে লাল কার্ড পাওয়ায় নেটিজেনদের ট্রল ও মকের শিকারও হচ্ছেন তিনি।
সোমবার (২ জুন) ব্রাজিলিয়ান সেরি আ’র ১১তম রাউন্ডের ম্যাচে ঘরের মাঠ স্তাদিও আরবানো কাদেরিয়াতে বোতাফোগোকে আতিথ্য দেয় সান্তোস। অনুমিতভাবেই ম্যাচের বেশিরভাগ আলো ছিল নেইমারের ওপর। কিন্তু ম্যাচ রাঙানো তো দূরের কথা, উল্টো বিতর্কিত কাণ্ডের জন্ম দিয়ে বসেন নেইমার। নেইমারের লাল কার্ড দেখার ম্যাচে সান্তোস হেরে গেছে ১-০ ব্যবধানে। এর আগে, প্রথমার্ধের শেষ দিকে আইর ফিরিওকে ফাউল করে একটা হলুদ কার্ডও দেখেছেন তিনি।
ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে ঘটে সেই আলোচিত ঘটনাটি। বাঁ-প্রান্ত থেকে ক্রস করেছিলেন গনসালো এস্কোবার। বল নেইমারের কাছে পৌঁছানোর আগেই সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষ গোলকিপার ইয়ন ভিক্তর। কিন্তু বল নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বল যায় নেইমারের শরীর বরাবর। ফিরতি বল বোতাফোগোর গোলের দিকে যাচ্ছিল। তবে সেটা ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন বোতাফোগের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দাভিদ রিকার্দো। তার আগেই হুট করে হাত দিয়ে টেনে বল জালে জড়িয়ে দেন নেইমার।
নেইমারের এ কীর্তি মনে করিয়ে দেয় ম্যারাডোনার সেই বিখ্যাত ‘হ্যান্ড অব গড’কে! ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন দিয়াগো।
তবে, ম্যারাডোনার মতো বাহবা পাননি নেইমার। গোল বাতিলের পাশাপাশি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ এ গোলদাতা।
এই লাল কার্ডের পর নেইমার নিজেই মুখ খুলেছেন। ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, গোলের জন্য বেশি মরিয়া হয়ে গেলে কখনো কখনো আমরা ভুল করে বসি। আমি আমার সতীর্থ তো বেই, ভক্তদের কাছেও মাফ চাইছি। আমি ভুল করে ফেলেছি, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন।
তিনি আরও বলেন, আজ যদি আমি লাল কার্ড না দেখতাম, আমি নিশ্চিত আমরা ৩ পয়েন্ট নিয়েই ম্যাচটা শেষ করতাম। আজকের ম্যাচের জন্য দলের অভিনন্দন প্রাপ্য। এই ৩টি পয়েন্ট না পাওয়ার দায় একান্তই আমার নিজের।
উল্লেখ্য, নেইমারের বিদায়ে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সান্তোস। এই সুযোগটা ভালোভাবে নেয় প্রতিপক্ষরা। ম্যাচের ৮৬ মিনিটের মাথায় আর্তুর গিমারেসের গোলে লিড নেয় অতিথিরা। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বোতাফোগো।