

আবু হেনা সাকিল, রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুই কর্মদিবসের মধ্যে তাঁর বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এই অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কামরুন নাহার অনিকা। তিনি জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূইয়া এবং একই বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিন জাহান মিমের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও বিয়ে সংক্রান্ত অভিযোগ ওঠে। তানজিল ভূইয়ার সাবেক স্ত্রী মোছাঃ সোমা খাতুন এই অভিযোগ তোলেন। পরবর্তীতে তাসনিন জাহান মিম অভিযোগ অস্বীকার করে লিখিতভাবে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করলেও পরে নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিয়ের সত্যতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং পরে ভিন্ন অবস্থান নেওয়ায় পুরো ব্যাচ বিভ্রান্ত হয় এবং একাডেমিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি তাসনিন জাহান মিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করেন এবং ক্লাস চলাকালীন সময়ে এক শিক্ষককে খাতা ছুড়ে মারেন।’
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা জানান, ‘এসব ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা তাঁকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি নিয়ে বিভাগের সভাপতির কাছে অভিযোগপত্র দিতে গেলে সভাপতি তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান এবং তার কক্ষ ত্যাগ করেন। পরে শিক্ষার্থীরা অফিস কক্ষে অভিযোগ দিতে গেলে সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূইয়া চেম্বার থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। এছাড়া বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত হোসেন এবং অফিস কর্মচারীরা তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করলেও তিনি বারবার আমাদের দিকে তেড়ে আসেন এবং হুমকি দেন।’
জানা গেছে, এর আগে আজ দুপুরে অভিযুক্ত শিক্ষক তানজিল ভূইয়ার স্ত্রী তাসনিন জাহান মিম আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।
তানজিল ভূইয়া বলেন, ‘আজ সকালে কিছু শিক্ষার্থী আমার স্ত্রীর বয়কটের দাবিতে চেয়ারম্যান স্যারের কাছে আবেদন করতে যায়। ঐ সময় আমার স্ত্রী আমার অফিস কক্ষে বসে ভিডিও কল করেন। কলে থেকে তিনি চেম্বারের ফ্যানের সাথে উড়না বেঁধে ফাঁস নেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি দ্রুত চেম্বারে উপস্থিত হয়ে তার জীবন বাঁচাতে চেষ্টা করি। চেম্বারের থাইগ্লাসের দরজা লাথি দিয়ে ভেঙে দিয়ে অফিসের পিওনের সাহায্যে স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করি। দাবি করেন, আরও দুই মিনিট দেরি হলে হয়তো তিনি স্ত্রীকে বাঁচাতে পারতেন না।'
এর আগে, গত ৩ নভেম্বর ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভাগের অধ্যাপক সাজু সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর একটা অভিযোগপত্র জমা দেন। যেখানে তিনি ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলার সময় খাতা ছুড়ে মারার অভিযোগ তুলেন।

