

জুয়েল রানা, তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার তিতাস উপজেলার দুধঘাটা নুরে মোহাম্মদী(স.) দাখিল মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ কাজ না করেই মাদ্রাসা সুপার ইব্রাহিম খলিল, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. বজলুর রহমান মোল্লার যৌথ স্বাক্ষরে ১৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে উক্ত মাদ্রাসায় জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইমরান খান ও সিদ্দিকুর রহমান রবেলের নেতৃত্বে এ অভিযান হয়।
তদন্তে শেষে সাংবাদিকদের জেলা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইমরান খান বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বেসরকারি রাজস্ব বাজেটের আওতায় দুধঘাটা নুরে মোহাম্মদী (সঃ) দাখিল মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণের জন্য ১৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে, কিন্তু কাজ না করে সংশ্লিষ্টরা পুরো বিল উত্তোলন করে নেওয়ার অভিযোগে আমরা সরেজমিনে তদন্তে এসে প্রতীয়মান হই এবং দেখতে পাই দৃশ্যমান কোনো কাজ করে নাই। এখন আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠাবো, প্রধান কার্যালয় আমাদেরকে যেই নির্দেশ দিবে পরবর্তীতে আমরা সে মোতাবেক কাজ করবো।
এদিকে একই দিনে বেলা ১১ টায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানিয়া আক্তার লুবনা, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, স্থানীয় মজিদপুর ইউপি প্রশাসক ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাদেক মোহাম্মদ জুনায়েদ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভূইয়া ঘটনা স্থলে গিয়ে মাদ্রাসা সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন সরকার, অভিভাবক সদস্য বৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সাথে বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলাকালীন সময় দুর্নীতি দমন কমিশন। বৈঠকে দীর্ঘ ৩ ঘন্টা আলোচনা করে উক্ত মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ কাজ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হলে সাথে সাথেই বিকাল তিনটায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন ঠিকাদার।
এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী অভিযুক্ত মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদ্রাসা সুপারের স্বাক্ষরসহ বিলটি আমার কাছে আসলে, আমি সুপারের নিকট জানতে চাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে কি না? তখন তিনি আমাকে বলেন কাজ সম্পন্ন হয়েছে তখন আমি স্বাক্ষর করেছি। পরবর্তীতে জানতে পারি কোনো কাজই করে নাই। তখন আমরা ঠিকাদারকে ডেকে এনে বিলের উত্তোলনকৃত সব টাকা পে-অর্ডার করে আমাদের অফিসে রেখেছি। তিনি আরো বলেন, আজকে আমিসহ তিতাস উপজেলা প্রশান ও মাদ্রাসা সভাপতি এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তবর্গের সাথে আলোচনা করে কাজটি করার জন্য সিদ্ধান্ত হয় এবং আজকেই কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার।
মাদ্রাসার সভাপতি সানোয়ার হোসেন সরকার বলেন, ২৩-২৪ অর্থ বছরে সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণের জন্য ১৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। কিন্তু কাজ না করেই মাদ্রাসা সুপার ইব্রাহিম খলিল, সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান ও উপসহকারী প্রকৌশলী বজলুর রহমান যৌথ স্বাক্ষরে বিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করি, যার প্রেক্ষিতে আজ দুদক তদন্তে এসেছে। উপজেলা প্রশাসন ও প্রকৌশলীরা এসে কাজ শুরু করতে চাইলে স্থানীয় অভিভাবক ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে সিদ্ধান্ত হয়। তবে যারা কাজ না করে টাকা তুলেছে তাদের বিচার চাই আমরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমাইয়া মমিন বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তদন্ত চলমান আছে, পাশাপাশি মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ কাজও চলবে। তবে যারা কাজ না করে বিল উত্তোলন করেছে তদন্তে প্রমাণিত হলে তারা বিচারের আওতায় আসবে।

