অমর ডি কস্তা, বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মিনহাস হোসেন আবীর (৯) এর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শিশু আবীরের লাশ পাওয়া যায় বাড়ি থেকে সামান্য দূরে উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের মহিষভাঙ্গা এলাকার নির্মাণাধীন একটি মসলা ফ্যাক্টরী সংলগ্ন ভুট্টা ক্ষেতের পাশে।
নিহত আবীর বনপাড়া পৌর শহরের মহিষভাঙ্গা মহল্লার মিলন হোসেনের একমাত্র ছেলে ও বনপাড়া আদিব ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছাত্র।
মোবাইল ফোনে টিকটক করা নিয়ে তার সাথে থাকা হযরত আলী মোল্লা (১২) এর দ্বন্দ হলে প্রথমে উভয়ের মধ্যে কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটে। পরে হযরত আলী পাশে থাকা ইট দিয়ে আবীরের মাথায় ও মুখে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় হযরত আলীকে শুক্রবার সকালে নিজ বাড়ী থেকে আটক করে থানা পুলিশ। আটককৃত হযরত একই এলাকার রিয়াজুল ইসলাম মোল্লার ছেলে ও স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয় জনগণ ও পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে আবীর সাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়। তার কাছে একটি দামী এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনও ছিলো। সন্ধ্যা গড়িয়ে এলেও আবীর বাড়িতে না ফেরায় মা-বাবা ও স্বজনরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর নিখোঁজ হওয়ার ৫ ঘন্টা পর রাত ৯টার দিকে আবীরের রক্তমাখা সাইকেলটি মসলা ফ্যাক্টরীর পাশে পড়ে থাকতে দেখে স্বজনরা। এরপর মাটিতে রক্তের দাগ অনুসরণ করে নির্মাণাধীন ফ্যাক্টরী সংলগ্ন ভুট্টা ক্ষেতের পাশ থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ খুঁজে পায়। এসময় তার মাথার আশেপাশে কয়েকটি আস্ত ইট পাওয়া যায়। যা দিয়ে শিশু আবীরের মাথায় ও মুখে উপর্যুপরি আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়।
শিশু আবীরের পিতা মিলন হোসেন সৌদি আরব প্রবাসী। গত কোরবানি ঈদের আগে বাড়িতে আসে। ছেলের লাশ জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করে বার বার বলছিলো ‘এভাবে আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে তাদের লাশও আমি দেখে মরতে চাই। আমি খুনীদের ফাঁসি চাই।’
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম সারোয়ার হোসেন জানান, আটক হযরতকে আদালতে হাজির করা হবে। বয়সে শিশু হওয়ায় তার বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দিবে।