জিহাদ রানা, বরিশাল ব্যুরো চীফ: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ও বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মঙ্গলবার মধ্যরাতে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় উভয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারটি বাস এবং বিএম কলেজের প্রশাসনিক ভবনসহ ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়।
রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হওয়ার ঘটনা স্বীকার করেছেন বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
নগরের বাংলাবাজার এলাকার ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের এক নারীর ভবন নির্মাণ বন্ধ করে রেখেছে ওই নারীর প্রতিবেশী একটি পক্ষ। এ বিষয়ে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করে ঘটনাস্থলে এনে কাজ শুরু করার চেষ্টা চালান ওই নারী। কলেজের সমন্বয়কারীদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই বাড়িতে যান একদল শিক্ষার্থী। খবর পেয়ে ওই নারীর প্রতিপক্ষের মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ঘটনাস্থলে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে আসেন। এ সময় মোস্তাফিজকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার মানববন্ধনের আয়োজন করে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওদিকে মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
পরে মঙ্গলবার রাতে নগরের বটতলা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে চাঁদাবাজির অভিযোগে মারধর করেন কলেজ শিক্ষার্থীরা। তাদের উদ্ধারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাস নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে বাসটি ভাঙচুর এবং চালকসহ ১৫ থেকে ২০ জনকে মারধর করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এসব ঘটনার সূত্র ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে হামলা-ভাঙচুর চালান। রাত ১টা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত বিএম কলেজের প্রশাসনিক ভবন, তিনটি হল এবং শ্রেণিকক্ষ ভাংচুর করে। পরে ক্যাম্পাসজুড়ে ভাংচুর করেন ববি শিক্ষার্থীরা।
রাত পৌনে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন তারা। তবে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সংঘর্ষ হয়েছে। সকাল সাড়ে ৬টার পর পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. উন্মেষ রায় জানান, হামলায় আহত হয়েছে শতাধিক শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৩৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বরিশালের সাধারণ মানুষ। তাদের আশঙ্কা, এ ঘটনা অনেক দূর গড়াবে।