হুমায়ুন কবীর রিন্টু, নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম কবিরুল হক মুক্তি ও কালিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খান শামীমুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ আগষ্ট) কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামীদের অধিকাংশই আগে থেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ দলীয় কিছু পাতি নেতা-কর্মী ছাড়া অন্যরা গা ঢাকা দিয়েছে।
কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বাস নওশের আলী বাদী হয়ে সোমবার (২৬ আগষ্ট) রাতে নড়াগাতী থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিএম কবিরুল হক মুক্তি নড়াইল-১ আসনে ৪ বারের সংসদ সদস্য ছিলেন এবং খান শামীমুর রহমান ওছি দুই বার কালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ওছি খা নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
মামলার অন্যতম আরও তিন আসামিরা হলেন- কেন্দ্রীয় যুবলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সরোয়ার হোসেন, উপজেলার নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাহ উদ্দিন বশির, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক বাঐসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ফোরকান মোল্যা।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য বিএম কবিরুল হক মুক্তিসহ অন্যান্য আসামিরা ১৫ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র, শর্টগান, বন্দুক, হাতবোমাসহ জোটবদ্ধ হয়ে কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের বাগুডাঙ্গা এলাকায় বেআইনি সমাবেশ করে। এতে বিএনপির নেতা-কর্মীসহ এলাকায় জনমনে ভীতি সঞ্চার করে। এছাড়া বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পতনের জন্য সরকার বিরোধী মিছিল সহকারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। একই সাথে তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের এবং এলাকার মানুষের মালামাল লুটপাটের চেষ্টা করে। এমনকি তারা খুন জখমের হুমকি দিয়ে জনমনে ত্রাস সৃষ্টির জন্য হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। শর্টগান ও বন্দুক থেকে গুলি ছুড়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিস্ফোরক আইনে সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। এদিকে মামলার বাদি ও স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মামলার ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও পুলিশ কোন আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি। যা খুব দু:খজনক। অথচ এসব আসামিদের দাপটে এলাকার সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেনি। বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি। এসব আসামিদের গ্রেফতার পূর্বক তাদের সম্পদের হিসেব নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।