বায়ু দূষণ, ঢাকা শহরের নিত্যসঙ্গী। দিনের পর দিন বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর শীর্ষে থাকে ঢাকা। ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা পিএম ২ দশমিক ৫ এবং, ক্ষতিকর গ্যাসীয় উপাদানের উপস্থিতি আছে, স্বাভাবিকের চেয়ে ৬-৭ গুণ বেশি।
ঢাকার বাতাস পরিশৃুদ্ধ করতে নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। মহাখালী, গুলশান ও ফার্মগেটের মতো জনবহুল এবং দূষণপ্রবণ এলাকায় বেশ কয়েকটি আউটডোর এয়ার পিউরিফায়ার বসাবে ডিএনসিসি। এসব যন্ত্র এর আশপাশের ৩০ হাজার ঘনফুট এলাকার বাতাস পরিশুদ্ধ করতে পারবে।পরীক্ষামূলকভাবে ৪-৫টি স্থানে বসানো হবে এই পিউরিফায়ার।
বাংলাদেশের আগে এয়ার পিউরিফায়ার বা স্মগ টাওয়ার দিয়ে দূষণ রোধের চেষ্টা করছে ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশ। তবে সেসব দেশে এমন প্রযুক্তি খুব একটা সফলতার মুখ দেখেনি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর কার্যকারিতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
ডিএনসিসির এই এয়ার পিউরিফায়ারের কার্যপ্রণালী অনুযায়ী, এইচডিসিটি ৫১০০০ মডেলের এসব এয়ার পিউরিফায়ার, এর আশপাশের ৩০ হাজার ঘনফুট এলাকার বাতাস থেকে পিএম ২ দশমিক ৫ এবং পিএম ১০ ধুলিকণা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত শোষণ করতে পারবে। অর্থাৎ এটি বাতাসে দূষিত গ্যাসীয় পদার্থ শোষণে ব্যর্থ। তবু এই ধরনের উদ্যোগ হাতে নেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসি’র প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, এটি নিজেদের খরছে নয় বরং স্পন্সর করা হবে। কাজ করলে তা বাস্তবায়ন হবে অন্যথায় হবে না।
কিছু গণমাধ্যমে এয়ার পিউরিফায়ার নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যদি মনে করি শুধু পিউরিফায়ার দিয়ে পুরো সমস্যার সমাধান সম্ভব এটি ভুল ধারণা। এটি কোনো প্রকল্প নয় বরং একটি পাইলট প্রচেষ্টা। আমরা এর কার্যকারীতা দেখতে চাই।
এ বিষয়ে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, সাধারণত এটি ইনডোরের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। চার ধরনের দূষণ আছে। এয়ার পিউরিফায়ার শুধু ধুলিকণা শোষণ করতে পারে। অন্যগুলোর ক্ষেত্রে এটি খুব বেশি পরীক্ষিত নয়।
তিনি আরও জানান, এয়ার পিউরিফায়ার কোনো জায়গায় কাজ করতে পারে আবার নাও করতে পারে। নিয়ন্ত্রিতভাবে দুই-একটি জায়গায় ব্যবহার করে দেখা যেতে পারে। তবে এটিকে শতকোটি টাকা বিনিয়োগের প্রকল্প হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।
বিভিন্ন অভিযোগ মাথায় নিয়েই আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ‘সিআরএস’ এর সাথে এবিষয়ে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর করবে ডিএনসিসি। তবে ঠিক কবে নাগাদ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে তা এখনও নির্ধারণ হয়নি।