লিওনেল মেসিকে একদিন জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, ‘আপনার কাছে এতো পুরস্কার, এতো গোলের রেকর্ড: কোন আক্ষেপ রয়েছে?’
উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে দামি ওয়ার্ল্ড কাপ, যেদিন নিজের দলকে ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে সক্ষম হবো, সেদিন ধরে নিবো ভালো কিছু করেছি।’
কথাগুলো ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ পাওয়ার আগের ঘটনা। যেকোন প্লেয়ারের জন্য দল বড়; নিজের পারফরমেন্স পরে। তবে, বাংলাদেশের বেলায় ঘটনা উল্টো। ঘরের মাঠে হংকংয়ের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে অনেকটা চাপে ছিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) কাইতাক স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ফিরতি ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জয় ছাড়া বিকল্প নেই; এমন সমীকরণ মাথায় রেখেই মাঠে নেমেছিলেন টাইগাররা। তবে, ম্যাচের ৩৬ মিনিটেই অঘটন। তারিক কাজীর ভুলে পাওয়া পেনাল্টি কাজে লাগিয়ে এগিয়ে গেল হংকং চায়না। অন্যদিকে, ম্যাচের প্রথমার্ধে মাঝমাঠ থেকে শুরু করে সব পজিশনে খুব একটা ভালো খেলেনি ভিজিটররা।
তবে, দ্বিতীয়ার্ধে নড়েচড়ে বসে হামজা-শমিতরা। অন্যদিকে, কোচ বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা যেন ঘুমাচ্ছিলেন। ম্যাচের ৬৪ মিনিটের দিকে হঠাৎ তার মনে হয়েছে প্লেয়ার পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এর আগে, তিনি হয়তো বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেননি। জায়ান ও সোহেল রানাকে তুলে জামাল ভূঁইয়া ও ফাহামিদুল ইসলামকে নামানো হয়। এরপরই খেলার টেম্পো কিছুটা পরিবর্তন হয়।
ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে দূরের পোস্টে সাদের ক্রসে ভালভাবে কন্টাক্ট করতে পারেননি ফাঁকা জায়গা বানিয়ে নেয়া ফাহামিদুল।
ঠিক দুই মিনিট পর শমিতকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডসহ লাল কার্ড দেখেন অলিভার গারবিগ। একজন বেশি নিয়ে খেলার সুবিধা বাংলাদেশ আদায় করে ৮৪তম মিনিটে।
মাঠের বামদিক থেকে বদলি ফাহিমের দূরের পোস্টে ফেলা ক্রসে হেড করে বল মাটিতে নামান ফাহামিদুল। দারুণ ক্ষিপ্রতায় ছুটে নেয়া শটে গোল করেন রাকিব। কিন্তু সেই গোল দিয়ে কাণ্ডজ্ঞানহীন সেলিব্রেশনে ব্যস্ত রাকিব। গোল করেই ছুটে গিয়ে স্টেডিয়ামের পাশের ইলেকট্রিক বোর্ডে উঠে বসে পড়লেন তিনি। তাকে অভিনন্দন জানাতে ছুটে এলেন সাদ-ফাহামিদুল। সেলিব্রেশন করতে গিয়ে সময় নষ্ট করলেন তারা।
তবে, হামজা- শামিত তখন ভাবছেন কীভাবে প্রতিপক্ষকে আরেকটি গোল দিয়ে ম্যাচটি জেতা যায়। সমতায় ফেরার পর শামিত সোম ছুটে গিয়ে বল তুলে আনেন জাল থেকে। অন্যদিকে, হামজা তখন উপলব্ধি করতে পেরেছেন ম্যাচটি জেতার জন্য ৫ মিনিট সময়ও নেই। তাই, সেলিব্রেশনে যোগ না দিয়ে জাল থেকে বল কুঁড়িয়ে দৌড়ে মাঝমাঠে গিয়ে নির্ধারিত স্থানে রাখেন।
ম্যাচে হার-জিত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে, খেলা জেতার মেন্টালিটি থাকাটা জরুরি। বিশেষকরে, দলের জন্য খেলা; শুধু নিজের জন্য নয়।