

সুজন হোসেন রিফাত, রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি: মাদারীপুরের রাজৈরে প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে অনিক আশ্চর্য (৩৫) নামে এক চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের শিমুলতলা এলাকার নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত অনিক পার্শ্ববর্তী এক নম্বর ব্রিজ এলাকার সিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জরুরি বিভাগের (ডিএমএফ) চিকিৎসক ছিলেন। তিনি একই উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক অঞ্জন আচার্যের একমাত্র ছেলে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
পুলিশ, হাসপাতাল ও পরিবার জানায়, প্রায় ৮ বছর ধরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে টেকেরহাট সিটি হসপাতালে কর্মরত ছিলেন অনিক। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দেওয়ার জন্য টেকেরহাট নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের ৩য় তলায় ফ্ল্যাটবাসায় তিনি ভাড়া থাকতেন। একই সঙ্গে পাশের রুমে থাকতেন ওই হসপাতালের এক্স-রে অপারেটর নৃপেন। সোমবার রাতে প্রতিদিনের মতো রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান শেষে অনিক বাসায় আসেন এবং নৃপেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের গানের অনুষ্ঠানে যান। এ সময় প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়া করে তাকে মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে রেখে ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন অনিক। পরে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নৃপেন এসে চা খাওয়ার জন্য তাকে ডাকতে যান। এসময় দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজার ফাঁকা দিয়ে উঁকি দেন এবং অনিককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান নৃপেন। তাৎক্ষণিক তিনি হসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। এরপর রাজৈর থানায় জানালে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মরদেহটি উদ্ধার করেন এবং মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
অনিকের মা চিনু আচার্য জানান, বিয়ে করার আগে থেকেই ওই মেয়ের (মুন্নি) সাথে সম্পর্ক হয়, ওর জন্য আমার অনিক আত্মহত্যা করেছে, ওর ফাঁসি চাই, আর যেন কোন মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়।
সিটি হসপিটালের মালিকপক্ষ আনিসুর রহমান জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর যাবত কাজ করতেন অনিক। প্রেমের সম্পর্কে জড়িত ছিল। গতকাল রাতে ওই প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তাকে ভিডিও কলে রেখেই আত্মহত্যা করেছে।
মাদারীপুরের রাজৈর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণে মোবাইলে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছে। তবে কেউ বলছে কথিত স্ত্রী আবার কেউ বলছে প্রেমিকা। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

