বাগেরহাট প্রতিনিধি: চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে তৃতীয় দিনেও বাগেরহাট জেলা ও উপজেলায় আধাবেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার আগেই বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির কয়েক হাজার নেতাকর্মীরা জেলার ১০টি নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়ে প্রধান গেট ঘিরে রেখে অবস্থান নেয়। এতে করে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে আধাবেলা বন্ধ থাকে জেলা সব নির্বাচন অফিসের দৈনন্দিক কর্মকান্ডসহ নাগরিক সেবা।
এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলার সব নির্বাচর অফিসে নেয়া হয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রবি ও সোমবার আবারো আধাবেলা জেলা ও ৯টি উপজেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘটের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম আগামী রবি ও সোমবার আধাবেলা জেলা ও ৯টি উপজেলার ১০টি নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দেন।
তিনি আরো বলেন, হিন্দু ধর্মালম্বীদের দুর্গোৎসবের কারণে জেলাব্যাপী হরতাল, মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও জেলার সব নির্বাচন অফিসে আরো দুইদিন আধাবেলা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথে আরো কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
স্বাধীনতার পর থেকে বাগেরহাট-১ (মোল্লাহাট-ফকিরহাট-চিতলমারী), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নামে জেলায় চারটি সংসদীয় আসন থাকলেও ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি আসন কমিয়ে ৩টি করার গ্রেজেট প্রকাশ করে। চুড়ান্ত গেজেট বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নামে তিনটি সংসদীয় আসনে বিন্যাস করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের এই গেজেট প্রকাশের পরপরই ক্ষুব্দ বিএনপি, জামায়তসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করে বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, সকাল-সন্ধ্য হরতাল, মহাসড়ক আবরোধ, জেলার সব সরকারি অফিস বন্ধ, সব নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে জেলাব্যাপী লাগাতর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।