রাজবাড়ী প্রতিনিধি: জুলাই-আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ সাগরের লাশ তার বাবার আপত্তির কারণে কবর থেকে তোলা সম্ভব হয় নাই। বিচার কাজে সহায়তার জন্য রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির টাকাপোড়া গ্রামের শহীদ সাগর আহমেদের (২১) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলনের নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও পরিবারের আপত্তির মুখে মরদেহ উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি।
বুধবার (৭ মে) সকাল ১১টার দিকে বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক শিপনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল টাকাপোড়া গ্রামে যায়। সঙ্গে ছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলাম। তারা কবর থেকে সাগরের মরদেহ উত্তোলনের প্রস্তুতি নেন।
তবে এসময় সাগরের বাবা তোফাজ্জল হোসেন ও মামলার বাদী চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম মরদেহ উত্তোলনে আপত্তি জানান। কান্নায় ভেঙে পড়ে সাগরের বাবা বলেন, “আমার ছেলেকে যদি তুলতেই হয়, তাহলে আগে আমাকে কবরে শুইয়ে তারপর তুলুন।”
ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক জানান, “পরিবারের আবেগ ও মতামতকে সম্মান জানিয়ে আমরা মরদেহ না তুলেই ফিরে যাচ্ছি। আমরা একটি লিখিত আবেদন সংগ্রহ করবো এবং আদালতকে তা জানাবো।”
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাশেদুল ইসলামও জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তারা মরদেহ উত্তোলনে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরিবারের অনিচ্ছার কারণে তা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আদালতকে জানানো হবে।
সাগরের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, “সাগরের হত্যাকাণ্ড পুরো জাতি দেখেছে। তাই নতুন করে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন নেই বলে আমরা মনে করি।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত হন মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের ছাত্র সাগর আহমেদ। পরদিন তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি সাগরের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।