ঢাকা
২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ২:৪৪
প্রকাশিত : জুলাই ৩০, ২০২৪
আপডেট: জুলাই ৩০, ২০২৪
প্রকাশিত : জুলাই ৩০, ২০২৪

পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ সবচেয়ে ভারী, কতটা ভারী, কতটা কষ্টের বলে বুঝাতে পারবো না

শফিকুল ইসলাম মিন্টু, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: আমার ছেলে মোবাইল পার্টসের ব্যবসা করতো। কোন রাজনীতি করতো না। কোটা আন্দোলনেও জড়িত ছিল না। দোকানে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেল। তাকে গুলি করে মারা হলো। শোকেরও তো একটা ধরন আছে, এটা কোন ধরনের শোক। পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ সবচেয়ে ভারী, কতটা ভারী, কতটা কষ্টের বলে বুঝাতে পারবো না। ছেলের মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। সৃষ্টিকর্তা ছেলেকে যেন জান্নাতবাসী করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জুবায়ের আহমেদ (২১) এর বিষয়ে এভাবেই বলছিলেন তার বৃদ্ধ পিতা মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিন। জুবায়েরের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের পূর্ব কাউরাট গ্রামে। নয় ভাই-বোনের মধ্যে সে ছিলো অষ্টম।

গত ২০ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গৌরীপুরের কলতাপাড়া বাজারে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে জুবায়ের গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওইদিনই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জুবায়ের মরদেহ বাড়িতে এনে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত জুবায়েরের বৃদ্ধ বাবা নিজেই ছেলের জানাজা পড়ান।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ বাজারে দোকান ভাড়া নিয়ে মোবাইল পার্টসের ব্যবসা করতো জুবায়ের। প্রতিদিন বাড়ি থেকেই দোকানে যাতায়াত করতো সে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা শুরু হলে মা নূরজাহান বেগম ছেলেকে দোকান খুলতে নিষেধ করেন। মায়ের কথা মেনে ১৮ ও ১৯জুলাই দোকান বন্ধও রাখে জুবায়ের। কিন্ত ২০জুলাই দোকানে যাওয়ার পথেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সে।

গত বছরের ২৩জুন জুবায়ের বিয়ে করে রামগোপালপুর ইউনিয়নের মার্জিনা বেগমকে। স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই শোকে পাথর হয়ে আছে মর্জিনা। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মর্জিনার বাবা তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে গেছে।

সোমবার জুবায়েরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নিরবতা। ছেলের কক্ষে বসে কান্নাকাটি করছে জুবায়েরের বাবা। আর ছেলে হারানোর শোকে নির্বাক হয়ে গেছে মা। কারো সাথে কথা বলছে না। ছেলের কথা উঠতেই ডুকরে কেঁদে উঠেন তিনি।

জুবায়েরের মা নুরজাহান বেগম বলেন, ঘটনার দিন আমি মাছ ও ভাত রান্না করে খাবার টেবিলে রেখে বিছানায় শুয়ে পড়ি। জুবায়ের খাওয়া শেষে করে বলে মা তোমার কথায় দেশের গন্ডগোলের জন্য দুইদিন ধরে দোকানটা বন্ধ রাখছি। আজ একটু দোকানটা দেখে আসি। এই বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল, ফিরে এলো লাশ হয়ে।

জুবায়েরের ছোট ভাই মোঃ কাউসার বলেন, ভাইয়া বাড়ি থেকে বের হওয়ার ঘন্টাখানেক পর আমরা স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ভাইয়ার বুকের বাম পাশে গুলির ছিদ্র ছিল। মরদেহ বাড়িতে আনার পর দেখতে পাই। ভাইয়ের আয়েই চলতো সংসার ও দুই ভাই বোনের পড়াশোনার খরচ। এখন আমাদের কি হবে?

প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
সম্পাদকঃ মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮, মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1840 474666 +880 1736 786915, 
+880 1300 126 624, ইমেইল: online.bdsangbad@gmail.com (online), news.bdsangbad@gmail.com (print), ads.bdsangbad@gmail.com (adv) 
বাংলাদেশ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram