বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বক্ষেত্রে সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম।
মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান ও লাঞ্ছনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেছেন, আজ যারা মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় জুতার মালা পরায়, একদিন তাদেরও এই মালা গলায় পরতে হবে। তাদেরও একই পরিণতি বরণ করতে হবে।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ এনায়েত করিমের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বক্ষেত্রে সম্মানিত করতে হবে জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অসুবিধা হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছো। তাহলে এখন কোটা করছো কেন? মুক্তিযোদ্ধারা যতদিন বেঁচে থাকবেন, তাদের সম্মান করতে হবে। তাদের সম্মানী লাখ টাকা হতে পারে।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের ১৬ বছরে যে দুর্নীতি হয়েছে, গত ১০ মাসের শাসনামলে যদি তারচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়, তাহলে কে ভালো? বৈষম্যবিরোধীদের সফলতা আমি হাজারবার সম্মান জানাই। কিন্তু তারা এখন মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় জুতার মালা পরায়, আমি বলে দিতে চাই, তাদেরও একদিন এই মালা পরতে হবে। এ থেকে তাদের মুক্তি নেই।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমার শুরু করা উচিত ছিল জয়বাংলা বলে। আমি শুরু করলাম জয়বাংলা বলে। জয়বাংলা দেশের স্লোগান, মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। আওয়ামী লীগ ভুল করেছে, দলীয় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। জয়বাংলা বাংলাদেশের স্লোগান। আমরা সর্বক্ষেত্রে জয়বাংলা বলবো, জয় বঙ্গবন্ধু বলবো। বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু কখনো বিচ্ছিন্ন নয়, বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কথা ভাবা যায় না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমান কেউ কখনো কাউকে অসম্মান করেননি। আর আমরা তাদের অসম্মান করে কথা বলি। শেখ হাসিনা কাউকে মানুষ মনে করতেন না, সম্মান করতেন না। তাই তাকে এই পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে। তার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে। আমরা যদি মানুষকে যার যার অবস্থান থেকে মূল্যায়ন না করি, সম্মান না করি, তাহলে একই পরিণতি হবে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ছেলেখেলা মেনে নেওয়া হবে না। মুক্তিযুদ্ধ কোনো ছেলেখেলা নয়। মুক্তিযুদ্ধ শুধু নয় মাসের একটি যুদ্ধ নয়। এর পেছনে আরও যুদ্ধ রয়েছে। সেই যুদ্ধকে অস্বীকার করলে তোমাদের চার পয়সার মূল্য থাকবে না। মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করার কম চেষ্টা হয়নি। কাদের সিদ্দিকীকে লেং মারার কম চেষ্টা হয়নি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, জিয়াউর রহমান আজ শ্রেষ্ঠ মানুষ। রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর পরেই জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতার সব শক্তি যদি একদিকে থাকতে পারতো তাহলে পরাজিত শত্রুরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় জুতার মালা পরাতে পারতো না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তৃতা করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি বুলবুল খান মাহবুব, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর খান মেনু ও বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বীর প্রতীক প্রমুখ।