সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার দেশত্যাগ ও পদত্যাগ খুবই আলোচিত ঘটনা শেখ হাসিনা সরকারের ইতিহাসে। ২০১৭ সালের ঘটনা নিয়ে ’অ্যা ব্রোকেন ড্রিম’ নামে বইও লিখেছেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে এস কে সিনহাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন। এমন অভিযোগ করে সাবেক এই প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান সাইফুল আবেদিন এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, তার বাসার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কারও সাথে দেখা করা বা কথা বলাও বন্ধ করে দেন গোয়েন্দারা।
আলাপে তিনি জানান, তখনকার সরকারের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের শুরু ঋণ খেলাপীদের দায়মুক্তি নিয়ে। যা চূড়ান্ত পর্বে গড়ায় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা বিষয়ক ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে।
এস কে সিনহা বলেন, নিম্ন আদালতের অধীনে হাজার হাজার বিরোধদলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করানো হয় পুলিশ দিয়ে। তাদেরকে রিমান্ডে নেয়া হয়, জামিন দেয়া হয় না। এগুলো ইচ্ছেমতো করছিল সরকার। এরপর আবার ষোড়শ সংশোধনী! তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বললেন, নিম্ন আদালতে এটা হবে না, আপনি ভুলে যান। তারপর আমি বললাম, সুপ্রিম জুডিশিয়ারি কাউন্সিল অ্যাবোলিশ করে আপনি সংসদে নিয়েছেন, এটি আমি হতে দেবো না।
এস কে সিনহা বলছেন, সরকার তাকে চাপ দিতে গোয়েন্দা সংস্থা ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, সরকার রুষ্ট হয়ে আমার ওপর অত্যাচার শুরু করে। তৎকালীন ডিজিএফআই প্রধান সাইফুল আবেদিন আমাকে বললেন, আপনি পদত্যাগ করবেন এবং দেশের বাইরে চলে যাবেন। আমি বললা, আপনি কে? আমাকে পদত্যাগ করতে বলার কর্তৃত্ব আপনি কোথায় পেলেন?
সাবেক এই প্রধান বিচারপতি জানান, অসুস্থ না হলেও তাকে নিয়মিত বিএসএমএমইউ থেকে চিকিৎসক পাঠানো হতো। যাতে তিনি অসুস্থ সেটি দেশবাসীকে বোঝানো যায়।
এস কে সিনহা এ বিষয়ে বলেন, আমি পুরোপুরি সুস্থ এরপরও পিজি হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) থেকে দু’তিনজন চিকিৎসক আসতেন। আমি বললাম, আপনারা কেন আসছেন প্রতিদিন? তারা বলেন সরকার পাঠিয়েছে, এখানে তাদের কিছুই করার নেই। এর মাধ্যমে সরকার বুঝাতে চেয়েছে আমি অসুস্থ সেজন্য চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবো। কিন্তু আমি অসুস্থ ছিলাম না।
বিদেশ যাওয়ার পর মামলা হয় এস কে সিনহার বিরুদ্ধে। সাজাও হয়েছে একটিতে। এখন তিনি দেশে ফিরে আইনি লড়াই চালাতে চান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতন হবে সেটি আগেই নিশ্চিত ছিলাম। এ সময় তিনি শেখ হাসিনার বিচার দাবি করেন।