দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। সেন্ট কিটসের সেই লজ্জার প্রতিশোধ সেন্ট ভিন্টসেন্টে তুলল টাইগাররা। দেশটির রাজধানী কিংসটাউনের আর্নস ভেল স্টেডিয়ামে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবকয়টি জিতে ক্যারিবিয়ানদের হোয়াইটওয়াশ করল লিটন দাসের দল।
আজ শুক্রবার বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতেছে ৮০ রানের বড় ব্যবধানে। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান করে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারের ২০ বল আগেই ১০৯ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এই প্রথম ক্যারিবিয়ানদের হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ।
১৯০ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে ক্যারিবিয়ানরা। তাসকিন আহমেদ-শেখ মেহেদীর বলে দিশেহারা হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। ৭ রানের মধ্যে ব্র্যান্ডন কিং ও জাস্টিন গ্রেভসের বিদায়ের পর ৫০ রানের আগেই আরও ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর একে একে ফিরে যান নিকোলাস পুরান, রোস্টন চেজ ও জনসন চার্লস। দলীয় ৬০ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে রোভম্যান পাওয়েল ফিরলে মহাবিপদে পড়ে স্বাগতিকরা।
সপ্তম উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রোমারিও শেফার্ড ও গুড়াকেশ মোতি। তবে রিশাদ হোসেনের দুর্ধর্ষ স্পিনে সেটিও ৩৫ রানের বেশি স্থায়ী হয়নি। দলীয় ৯৫ রানে সপ্তম উইকেট হারানো দলটি শেষমেশ অলআউট হয় ১০৯ রানে। শেফার্ডের ২৭ বলে ৩৩ রানই হয়ে থাকে ইনিংসের সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন রিশাদ। ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৩ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন আরেক স্পিনার মেহেদী। ২টি উইকেট তাসকিন আহমেদেরও।
এর আগে, বাংলাদেশের ১৮৯ রান করার পেছনে ছিল জাকের আলীর দানবীয় ব্যাটিং। ৪১ বলে ৭২ রানের দানবীয় ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন পুরো সফরজুড়েই ফর্মে থাকা জাকের। ৩টি চারের সঙ্গে তার দ্বিগুণ ছক্কা হাঁকান এই ডানহাতি ব্যাটার। জিততে হলে এই মাঠে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিততে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই মাঠে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ আজকের রানই। এর আগে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। এতদিন সেটাই ছিল সর্বোচ্চ।
আজ টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন। ব্যর্থতা কাটিয়ে এদিন ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। তবে ১৪ রান তুলেই রোমারিও শেফার্ডের বলে ক্যাচ দেন অধিনায়ক। তবে দারুণ খেলেছেন চোট জর্জরিত সৌম্য সরকারের জায়গায় ওপেনিংয়ে নামা পারভেজ হোসেন ইমন। ২১ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৩৯ রান করেন তিনি।
তিনে নেমে তানজিদ হাসান তামিম রান না পেলেও ২৩ বলে ২৯ রান করে দারুণ অবদান রেখেছেন চারে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ। এদিন পাঁচে নামেন জাকের। ছয় ও সাত নম্বর ব্যাটার শামীম হোসেন পাটোয়ারি ও শেখ মেহেদী হাসান দুজনই রান আউট হলে কিছুটা বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রান তখন ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৪। তবে তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান জাকের।
শেষ ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জাকেরের অবদানই ৩৫ বলে ৬৮। আর সংক্ষেপে হিসেবে করলে শেষ ৫ ওভারে ১ উইকেটে ৭৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। জাকের একাই তুলেছেন ২৩ বলে ৫৪। এর মধ্যে আলজারি জোসেফের করা শেষ ওভারে ৩টি ছক্কা হাঁকান জাকের। ১৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ১২ বলে ১৭ রান করেছেন তানজিম।