যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। তার মন্ত্রিসভায় টিউলিপকে জায়গাও দিয়েছিলেন। দেশটির ট্রেজারি বিভাগের ইকোনোমিক সেক্রেটারি হওয়ায় আর্থিক দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনির কাঁধে। সেই টিউলিপের বিরুদ্ধেই ওঠে একের পর এক দুর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগ।
বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে মধ্যস্থতার বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ওঠে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুর্নীতির তদন্তে উঠে আসে তার নাম। বরাবর অভিযোগ অস্বীকার করে আসলেও, যুক্তরাজ্যের বিরোধী দলের চাপে নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের অনুমতি দেন যুক্তরাজ্যের এই সিটি মিনিস্টার।
এখানেই শেষ নয়, এরপর একের পর এক ব্রিটিশ মিডিয়ার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রকাশ পেতে থাকে টিউলিপের অনিয়মের খবর। ফাইনান্সিয়াল টাইমসের খবর, আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নিয়েছেন তিনি। তার বোনের নামেও বিনামূল্যে আরও একটি ফ্ল্যাট নেয়ার খবর প্রকাশ হয় আরেকটি মিডিয়ায়।
দ্য টাইমস জানায়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা ছড়ানো থিংকট্যাঙ্কের সাথেও যুক্ত টিউলিপ। আর দ্য গার্ডিয়ানে দাবি, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারে সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগীদের একজন টিউলিপ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যানুযায়ী, আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য ও ইইউ লবিং ইউনিট এবং নির্বাচনী কৌশল দলের হয়েও কাজ করেছেন লেবার পার্টির এই নেতা।
ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের বিরুদ্ধে এতসব অভিযোগে বেশ চাপে পড়েন প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার। যদিও প্রধানমন্ত্রী এতদিন টিউলিপের পাশেই ছিলেন। বিরোধীদল থেকে ক্রমেই যখন জোরালো হচ্ছিল পদত্যাগের দাবি তখন টিউলিপ নিজেই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। জানিয়েছেন, তদন্ত কাজে সহায়তার জন্যই মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
লেবার পার্টির হয়ে মাত্র ১৬ বছর বয়সে রাজনীতিতে যোগ দেয়া টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের চারবারের এমপি। এবার দলটি ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। তবে নানা অনিয়মের অভিযোগে শেষপর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয়েছে শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপকে।