ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণিত বিভাগের প্রভাষক আদিব শাহরিয়ার জামানকে বাঁশ দিয়ে শরীরে আঘাত ও লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে ‘মিরপুর সুপার লিংক’ (৩৬ নম্বর) বাসের ড্রাইভার এবং হেলপারের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের মিরপুর ১১ নম্বর বাস স্টপেজ এ ঘটনা ঘটেছে বলে ওই শিক্ষক তার ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করেন।
নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে লাঞ্ছিত ও মারধরের শিকার হওয়ার বর্ণনা দেন এই শিক্ষক। তার ফেসবুক স্টেটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
“আজকে ১৫-২০ মিনিট আগে আমাকে মিরপুর সুপার লিংক (৩৬ নম্বর) বাসের ড্রাইভার এবং হেলপার মিলে শত মানুষের সামনে মেরেছে।“
“আমি আজকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটের এডমিশন এক্সাম ডিউটি শেষ করে মেট্রো না থাকায় লোকাল বাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেই। দীর্ঘদিন লোকাল বাসে ওঠার অভ্যেস নেই। যাই হোক, ৩৬ নাম্বার বাসে উঠি নিউমার্কেট থেকে। বাসটি মিরপুর ১০ এ এসে সিগনালে পড়ে। দীর্ঘ মিনিট বিশেক সিগনালে দাঁড়ানোর পর সিগনাল ছাড়লে বাসটি আরেকবার ইচ্ছাকৃতভাবে আটকাতে নেয়। বাসের অর্ধেকের মত যাত্রীই ছিল ভর্তি পরীক্ষার্থী। তারা অনুনয় করতে থাকে সিগনাল পার হবার জন্য। কিন্তু এরপরেও বাসটি কেবল বায়েই ঘেঁষতে থাকে। আমি তখন ধমক দেই। ধমকের উত্তরে ড্রাইভার আর হেলপার তর্ক করতে শুরু করে এবং বায়ে একদম ফুল হোল্ড করে দাঁড়িয়ে যায়। আমি তখন হুশ হারিয়ে গালি দেই। এটা আমার ভুল ছিল। কিন্তু সঙ্গে এও যোগ করতে চাই যে আমার কোনও তাড়া ছিল না, আমি কেবলই পরীক্ষার্থীদের স্বার্থ চিন্তা করে কাজটা করি।”
“এরপর ড্রাইভার আমাকে হুমকি দেয় যে আমার স্টপেজে (১১ নাম্বার) আমাকে নামতে দেবে না। একবার লাস্ট স্টপেজে নিয়ে তারা আমাকে পিটাবে। এরজন্য এমনকি তারা অন্য যাত্রীকেও জায়গা মত নামতে দিচ্ছিল না। এতে আমি আবারও রাগারাগি করি এবং ১১ নাম্বারের কাছে বাস থামাতে বাধ্য করি। তখন ড্রাইভার আর হেলপারও আমার সাথে নামে। ড্রাইভার একটা বাঁশ জোগাড় করে। সেটা দিয়ে সে আমার মাথায় বারি দেয়। সম্ভবত বেশি জোরে বারি দেয় নাই, কারণ ব্যথা করছে না। অথবা কাল সকালে টের পাব। এছাড়াও ড্রাইভার আমার পেটে লাথি দেয়, গেঞ্জি ধরে টেনে ছিড়ে ফেলে। এই সময়ে রাস্তা ভর্তি লোক আমাদেরকে ঘিরে থাকে এবং দেখতে থাকে। যেই পরীক্ষার্থীদের জন্য স্ট্যান্ড করেছিলাম, তারাও বাসে বসে জানালা দিয়ে পুরা ঘটনা দেখে। এরপর তাড়াতাড়ি করে বাসে উঠে ড্রাইভার আর হেলপার বাস টান দেয়।”
বিষয়টিকে ঘিরে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সোস্যাল মিডিয়াতে বিষয়টি দেখে অবগত হয়েছি কিন্তু আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ এলে বাস মালিক সমিতিকে ডাকানো এবং অন্যান্য যেসব করণীয় সেটা আমরা করব। তবে ইতোমধ্যে লালবাগ থানার ওসিকে আমি অবগত করেছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।