ঢাবি প্রতিনিধি: ৪৩তম বিসিএস এর গেজেট থেকে বাদ পড়া অফিসাররা তাদের যোগদান নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে ০৫/০১/২০২৫ তারিখের মধ্যে ৪৩ তম বিসিএস এর ২য় গেজেট থেকে বাদ পড়া অফিসারদের নাম গেজেটভুক্ত করে ১৫/০১/২০২৫ তারিখের সকল ক্যাডারদের সাথে যোগদান নিশ্চিত করতে হবে এই মর্মে দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দুপুর ১টায় সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে গেজেট বঞ্চিত ক্যাডার অফিসারদের পক্ষ থেকে মাসুমা আক্তার লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আপনারা জানেন আমরা দীর্ঘ ৪ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অপেক্ষার শেষে ৪৩ তম বিসিএস পরীক্ষার প্রতিটি ধাপ সততা ও সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক ২১৬৩ জন ২৬টি ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই। উল্লেখ্য, আমাদের ৪৩ তম বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তি ৩০ নভেম্বর, ২০২০ খ্রি. তারিখে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে সুপারিশ প্রাপ্তদের কয়েক দফায় তদন্ত সাপেক্ষে সুদীর্ঘ ১০ মাস পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১৫ অক্টোবর, ২০২৪খ্রি. তারিখে আমাদের অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। উক্ত গেজেটে যোগদানের তারিখ ১৭ নভেম্বর, ২০২৪খ্রি. নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে ২৮ অক্টোবর, ২০২৪খ্রি. তারিখে আমাদের যোগদান পিছিয়ে ১ জানুয়ারী, ২০২৫খ্রি. নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।’
আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা ১ জানুয়ারি, ২০২৫খ্রি. তারিখে যোগদানের নির্দেশনা মোতাবেক উদ্দীপনা ও আনন্দের সাথে যোগদানের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং আমাদের বহু সহকর্মী পূর্ববর্তী চাকুরী থেকে অব্যাহতি নেন। এমনকি সুপারিশপ্রাপ্তির পরবর্তী সময়ে আমাদের অনেকেই সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির একাধিক চাকুরীর সুযোগ লাভ করলেও যোগদান করেননি। এছাড়াও ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪খ্রি. তারিখ থেকে শুরু হওয়া ৪৪ তম বিসিএস এর মৌখিক পরীক্ষায়ও অনেকেই অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমরা প্রথম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হলেও ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪খ্রি. তারিখে ২য় বার প্রকাশিত গেজেটে ১৬৮ জন সহ সর্বমোট ২২২ জন প্রার্থী গেজেট থেকে বঞ্চিত হই। এমতাবস্থায়, অধিকাংশ প্রার্থী চাকুরী হারিয়ে বেকার হয়ে যাওয়ায় আমাদের এই ২২২ জন প্রার্থী এবং তাদের উপর নির্ভরশীল পরিবার সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন, চরম হতাশাগ্রস্ত এবং দিশেহারা হয়ে পড়েছে।’
জুলাই বিপ্লবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পথ ধরে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে লক্ষ্য তা পূরণে মেধা ও যোগ্যতা ভিত্তিক সিভিল সার্ভিসের বিকল্প নেই। কিন্তু আমরা সুপারিশপ্রাপ্ত এবং গেজেট প্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও পুনঃপ্রকাশিত গেজেটে অজ্ঞাত কারণে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের পরিপন্থী। যা একই সাথে আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বেদনাদায়ক।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়, ‘আপনারা আমাদের আশা আকাঙ্খা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। আপনাদের মাধ্যমে আমরা একই সাথে ২২২ টি পরিবারের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি বিষয়টি আন্তরিকভাবে বিবেচনা করে আমাদেরকে পুনরায় গেজেটভুক্ত করার আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন যা আমাদের জীবন ও ক্যারিয়ার রক্ষায় সহায়তা পূর্বক তারুণ্যের শক্তি দিয়ে রাষ্ট্রের সেবাদানে সুযোগ প্রদান করবেন। আপনারা আমাদের এই দুঃখ-দুর্দশার চিত্র দেশবাসী সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিবেন।’
উপস্থিত ক্যাডার অফিসারদের গেজেট বঞ্চিতের কোনো কারণ জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমাদেরকে কোন কারণ দর্শানো হয়নি। আমাদেরকে পাঁচ ধাপ তদন্তের মাধ্যমেই প্রথম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। অজ্ঞাত কোন কারণে আমাদের ২য় গ্যাজেট থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’