দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চুয়েটসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ এক অস্থির সময় পার করছে এবং কোটা আনন্দোলনকে কেন্দ্র করে অদ্যবধি দেশের অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীরা আহত ও নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়েছে; এই বিষয়ে চুয়েট শিক্ষক পরিবার খুবই উদ্বিগ্ন এবং ব্যাথিত।
দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতাহত শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি ও চুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আটককৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ ১লা আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ২০২৪ খ্রি. দুপুর ১২:০০ ঘটিকায় চুয়েট শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এক মৌন মিছিল উপাচার্য অফিসের সামনে থেকে অনুষ্ঠিত হয়। মৌন মিছিলটি উপাচার্য অফিসের সামনে থেকে শুরু হয়ে চুয়েট প্রধান ফটক পেরিয়ে কাপ্তাই মহাসড়কে কিছু সময় অবস্থান করে আবার উপাচার্য অফিসের সামনে এসে শেষ হয়। মৌন মিছিল শেষে এক আলোচনা সভা হয়। চুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আরাফাত রহমান সভাটি পরিচালনা করেন। সভায় সমিতির ২৫০ জনের উপর শিক্ষক উপস্থিত হন।
সভায় বক্তরা বলেন, “যে সকল শিক্ষার্থারীরা নিহত হয়েছেন তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতাহত শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সকল ঘটনার বিচার করতে হবে বলে দৃঢ় দাবি জানান।” '
শিক্ষকরা আরও বলেন, “চুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়েছে, তাদেরকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।” সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আরাফাত রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “একটি অহিংস আন্দোলন যারা হত্যা, দমন-নিপীড়ন এবং হয়রানিমূলক গ্রেফতারের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে, তাদেরকে নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থা এবং বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং আর কোনো শিক্ষার্থীদেরকে হয়রানিমূলক গ্রেফতার করা যাবে না।”
সমাপনী বক্তব্যে চুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম বলেন, “রাতের আঁধারে অহিংস চুয়েট শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া অবিবেচনাপ্রসূত, অমানবিক। সারাদেশে কর্তাব্যক্তিদের এরূপ অদুরদর্শী সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি জটিল তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের হত্যাকারীদের বিচারসহ সকল যৌক্তিক দাবীতে চুয়েট শিক্ষকসমাজের সমর্থন সর্বদা অবিচল থাকবে।”
প্রায় দেড় ঘণ্টার বক্তৃতা শেষে চুয়েট শিক্ষক সমিতির সকল শিক্ষকেরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনবোধে আরও কঠোর কর্মসূচি প্রদানের মত প্রকাশ করে উপাচার্য অফিসের প্রধান ফটক ত্যাগ করেন। উল্লেখ্য যে, শিক্ষকদের এই কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে চুয়েট কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।