ঢাকা
৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৮:৫২
প্রকাশিত : এপ্রিল ২৯, ২০২৫
আপডেট: এপ্রিল ২৯, ২০২৫
প্রকাশিত : এপ্রিল ২৯, ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে আট মাসে বন্ধ ১৯ পোশাক কারখানা

এক সময় চাশিল্প ছিল দেশের প্রধান অর্থ আয়কারী খাত। রপ্তানি করে সবচেয়ে বেশি আয় হতো এই শিল্প থেকে। সেই চাশিল্পকে পেছনে ফেলে তার স্থান দখল করে নিয়েছিল তৈরি পোশাক শিল্প খাত'। বেশ দাপটের সঙ্গেই এই শিল্প দেশের প্রধান অর্থ আয়কারী শিল্প হিসেবে প্রথম স্থান দখল করে রেখেছে দীর্ঘ সময় ধরে। কিন্তু নানা কারণে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

নিট শিল্পের অন্যতম প্রধান জেলা নারায়ণগঞ্জে গত আট মাসে ১৯টি তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন ১ হাজার ৫৭৩ জন। যার মধ্যে পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা ৭৮৯ জন। বিকেএমইএ, শিল্প পুলিশ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত ৫ আগস্টের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানাগুলোতে নানা কারণে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে গ্যাস-সংকট এবং গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানাগুলোতে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ উৎপাদন কমে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। নিট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে কার্যাদেশ না থাকা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার, উৎপাদন অপ্রতুলতায় নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া পোশাক শ্রমিকদের কেউ কেউ নানাভাবে উসকে দিয়ে এ খাতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গত ৫ আগস্টের পর প্রায়ই নানা দাবি নিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে কারখানায় কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। এর ফলে সময়মতো অর্ডার সরবরাহ করতে পারছেন না অনেক কারখানা মালিক।

জেলা শিল্পাঞ্চল পুলিশ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে ছোটবড় মিলিয়ে সর্বমোট ৪৪২টি তৈরি পোশাক কারখানা সচল রয়েছে। আর বিভিন্ন কারণে গত ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত গত আট মাসে ১৯টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৯টি পোশাক কারখানার মধ্যে সিংহভাগই বন্ধ হয়েছে আর্থিক সংকট এবং পর্যাপ্ত কার্যাদেশের অভাবে।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-৪, নারায়ণগঞ্জ জোনের পরিদর্শক (গোয়েন্দা) সেলিম বাদশা বলেন, কিছু কারখানা বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি আবার অনেক কারখানা নতুন করে উৎপাদনে শুরু করেছে। কারখানাগুলোতে গ্যাস-সংকটজনিত সমস্যা আছে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিভিন্ন সমস্যা মিলিয়ে আমরা কঠিন সংকটে রয়েছি। কারখানা পরিচালনা করতে আমাদের অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের যখন টিকে থাকাই দায়, তখন গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা আমাদের ওপর বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্প খাত ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত শিল্প খাতের জন্য আত্মঘাতী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ মূল্যবৃদ্ধির ফলে শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন সংকটে পড়বে এবং নতুন শিল্প উদ্যোক্তাদের শিল্প কারখানা স্থাপনে নিরুৎসাহিত করবে। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি সে অনুযায়ী আমরা নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ পেতাম তাহলেও আমরা এতো ক্ষতির সম্মুখীন হতাম না।

পোশাক কারখানা বন্ধের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, 'বায়ার না পাওয়া, আর্থিক সংকট ও বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কিছু মালিক পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তারাও আত্মগোপনে চলে গেছেন। আর এসব সমস্যার কারণে বিগত কয়েক মাসে গাজীপুর, সাভার ও নারায়ণগঞ্জে ৯৫টি শিল্প-কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া গ্যাস-সংকটে উৎপাদনের গতি কিছুটা কমেছে।'

প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮, মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1840 474666 +880 1736 786915, 
+880 1300 126 624, ইমেইল: online.bdsangbad@gmail.com (online), news.bdsangbad@gmail.com (print), ads.bdsangbad@gmail.com (adv) 
বাংলাদেশ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram