কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: শুভ হালখাতার ব্যানার ফেস্টুনে সাজানো ভূমি অফিসের চত্বর। আনা হয়েছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য গরু ও ঘোড়ার গাড়ি। মঙ্গলবার সকালে ফিতা কেটে হালখাতার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উদ্বোধনের পর লাইনে দাড়িয়ে জমির খাজনা দিচ্ছেন মালিকরা। খাজনা দেয়ার পর চেয়ার টেবিলে বসিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে মিষ্টি, মোয়া মুড়ি। এ দৃশ্য কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা ভূমি অফিসের।
বৈশাখে দোকানের বাকি তুলতে হালখাতার আয়োজন করা হলেও এবার জমির খাজনা তুলতে করা হয়েছে হালখাতার আয়োজন। এমন হালখাতার আয়োজন করেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা প্রশাসন। জমির মালিকরা খাজনা দিতে আসলেই খাওয়ানো হচ্ছে মোয়া, মুড়ি ও মিষ্টি। এতে খুশি তারা। এমন অভিনব হালখাতার ধারা অব্যাহত রাখলে বাংলা বর্ষের শুরুতে জমির খাজনা দিতে আগ্রহের কথাও জানান তারা।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার বাসিন্দা সোহরাব আলী জানান, আগে ভূমি অফিসে খাজনা পরিশোধ করতে গেলে হয়রানিতে পড়তে হতো। উপজেলা প্রশাসনের হালখাতা এসে হয়রানি ও দালাল ছাড়াই সরাসরি খাজনা দিলাম। ২ একর ৮৭ শতাংশ জমির জন্য তিন বছরের খাজনা ৬ হাজার ২২১ টাকা পরিশোধ করেন বলে জানান তিনি।
সন্তোষপুর ইউনিয়নের গাগলা এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, সহজে জমির খাজনা দিতে পারলাম। আবার মোয়া, মুড়িসহ মিষ্টিও খেতে পারলাম। এমন হালখাতা যেন প্রতি বছর অব্যাহত রাখা হয়।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, বাংলা সন শুরুর দিকে হালখাতার মাধ্যমে জমির খাজনা তোলার প্রচলন থাকলে কালের আবর্তনে তা হারিয়ে যায়। মূলত সেই ভাবধারায় জমির মালিকদের উৎসাহের সহিত খাজনা দিতে এবং দেশের রাজস্ব বাড়াতে এ হালখাতার আয়োজন। এতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার কথাও জানান আয়োজক কর্মকর্তা।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, অনেক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত রাখা হবে। পহেলা বৈশাখের পরদিন নাগেশ্বরী উপজেলার ১৫টি ভূমি অফিসে একযোগে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় হালখাতা।