রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম মুজিবনগর থেকে ৫ আগষ্টের পর জিয়া নগর নামকরণ করায় ওই ইউপি আওয়ামী লীগ নেতা ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আকমল হোসেন টিক্কার নেতৃত্বে এলাকার বিএনপির কর্মী সমর্থকদের বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
গত বুধবার (৯ এপ্রিল) গভীর রাতে কসবামাজাইল ইউনিয়নের পারকুল এলাকার একাধিক বিএনপির কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়।
অভিযুক্ত আকমল হোসেন টিক্কা পাংশা উপজেলার সন্ত্রাসী টিক্কা বাহিনীর প্রধান ও কসবামাজাইল ইউনিয়নের নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহম্মদ সালাউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আজ রোববার এ বিষয়ে একটা লিখত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।
ভুক্তভোগীরা হলেন, ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের মৃত মো. চেনিরদ্দিন বিশ্বাস ছেলে মো. ইজাহার বিশ্বাস (৪৫), একই এলাকার মৃত ইবাদত মোল্লার ছেলে মনিরুদ্দিন মোল্লা (৩৫), ইসরাইল মোল্লার ছেলে শহিদুল মোল্লা (৪৫), ইউনিয়নের দড়ি বাংলাট (জিয়া নগর) গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ মণ্ডলের ছেলে মো. সাত্তার মণ্ডলসহ আরও বেশ কয়েকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকার পতনের পর কসবামাজাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম মুজিবনগর থেকে জিয়া নগর করায় ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাতে বিএনপি সমর্থককারী ১০টি বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী মো. ইজাহার বিশ্বাস বলেন, আমি কৃষি কাজ করি, রাজনীতি করি না। তবে বিএনপির সমর্থক। আমার বাড়ি ফাঁকা জায়গায় পেয়ে মাঝ রাতে টিক্কা বাহিনী এসে ভাংচুর করেছে। আমার দোকানের মালামাল নিয়ে গেছে। এখন শুনছি আবারও আমাদের মারবে।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। টিনের বেড়ায় শব্দ শুনে ঘুম ভাঙে। কোনো উপায় না পেয়ে বউ, ছেলে ও মেয়ে নিয়ে মাঠের মধ্যে পালাই। আমি কয়েকদিন পরে বিদেশ যাবো, সেই টাকা নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আকমল হোসেন টিক্কার সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয় নাই।
কসবামাজাইল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহম্মদ সুলতান বলেন, এই এলাকা সাবেক রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা নিয়ন্ত্রণ করতো। তিনি পালিয়েছে, কিন্তু তার অস্ত্রধারী টিক্কা বাহিনী এখনও এই এলাকায় অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা দিনের বেলায় গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও রাতে অস্ত্র নিয়ে বের হয়ে বিএনপির কর্মী ও সমর্থকদের বসতবাড়িতে হামলা চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একজন নামধারী সন্ত্রাসী কিভাবে একটা রাজনৈতিক দলের কমিটিতে থাকে আমার বুঝে আসে না। আবার তাকে প্রশাসন গ্রেপ্তার করে না! এভাবে চললে মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারবে না।