ঢাকা
৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১২:১০
প্রকাশিত : এপ্রিল ২, ২০২৫
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৫
প্রকাশিত : এপ্রিল ২, ২০২৫

টাঙ্গাইলে ইমামের রাজকীয় বিদায়, পেনশন হিসেবে পেলেন ৯ লাখ টাকা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: এ কোন সামরিক বেসামরিক বা উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা নয়, বা মন্ত্রী এমপির রাজকীয় বিদায় নয়। এটি হলো ধর্মীয় আনুগত্যে বিশ্বাসী নিভৃত পল্লী এলাকার একটি মসজিদের ইমামের অবসরকালীন বিদায় অনুষ্ঠান। প্রায় তিন যুগ ইমামতি শেষে ইমাম সাহেবকে অবসরকালীন রাজকীয় বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছেন গ্রামবাসী। বিদায়বেলায় ইমাম সাহেবকে ফুল ছিটিয়ে এবং ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা দেন তারা। সাথে এককালীন পেনশন হিসেবে দেয়া হয় ৯ লাখ টাকা। পরে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঈমাম সাহেবকে পৌছে দেওয়া হয় তার বাড়িতে। ইমামের এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠানটি এক নজর দেখতে মসজিদের সামনে ভীড় করেন গ্রামবাসী।

ঈদের পরের দিন মঙ্গলবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীবকে এই রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। সম্মানিত করতে ঘোড়ার গাড়ি বহরের সাথে সঙ্গী হয়েছে অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল। নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটি এবং গ্রামবাসী এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। রাজকীয় বিদায় নেওয়া ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের মৃত কুরবান আলীর ছেলে।

জানা গেছে, ১৯৯১ সালে যুবক বয়সে ৬০০ টাকা বেতনে নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করেন মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান। বিদায়ের প্রাক্কালো ইমামের বেতন হয় ১৭ হাজার পাঁচশত টাকা। মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান ঢাকার লালবাগের একটি স্বনামধন্য মাদ্রাসা থেকে মাওলানা পাস করেন। তার মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী সে সময়ে ৬শত টাকা বেতন ধার্য করা হয়। তার এই দীর্ঘ ইমামতি পেশায় থাকাকালীন এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি অসংখ্য মানুষকে কুরআনের শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি জানাজা পড়িয়েছেন হাজারের অধিক মানুষের। গ্রামের মানুষ নানা ধরনের উপহার দিয়েও তাকে বিদায় জানান। তার বিদায়ী সফর সঙ্গী হয়ে এই গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন । এমন বিদায় জানাতে পেরে খুশি নতুন কহেলা গ্রামবাসীরাও।

ইমামের দীর্ঘদিনের স্মৃতি তার হৃদয়কে ব্যথিত করবে বলেও জানান। এমন ব্যতিক্রমী বিদায়ে এলাকাবাসীর ভালোবাসার কাছে আবেগাপ্লুত হয়ে কেদে ফেলেন ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান। ২০২৪ সালে গ্রামের পক্ষ থেকে ওমরা পালন করতে পাঠানো হয়েছিলো তাকে। ভালো এবং জানাশোনা একজন ইমামকে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগাপ্লুত পুরো গ্রামবাসী। অন্যদিকে সরকারি চাকরিজীবীদের মতো পেনশন দিতে পারায় খুশি স্থানীয়রা। পুরো দেশের ইমামদের দিকে সুদৃষ্টি দিবে গ্রামবাসীর এমনটাই দাবি।

নতুন কহেলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাশেম খান বলেন, ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান তার চাকরি জীবনে গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ইমামের প্রতি গ্রামবাসীর ভালবাসা তা জনশ্রতেই বুঝা যায়। আমরা গ্রামবাসী একজন উচুমানের ইমামকে বিদায় দিয়ে ব্যথিত।

বিদায়ী ঈমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান বলেন, আমি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের জানাজা পড়িয়েছি। ৬০০ জনকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি কাজগুলো করতে পেরে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায়বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছে তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, এমন বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ইমামের পরবর্তী জীবন ভালো কাটতে সরকারি চাকুরীর মত পেনশন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮, মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1840 474666 +880 1736 786915, 
+880 1300 126 624, ইমেইল: online.bdsangbad@gmail.com (online), news.bdsangbad@gmail.com (print), ads.bdsangbad@gmail.com (adv) 
বাংলাদেশ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram