রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীর কালুখালীতে নিখোঁজের ৩ দিন পর নিরব শেখ (১৭) নামে এক কিশোরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
রোববার (২৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের সালেপুর এলাকার পদ্মা নদীর কোল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিরব শেখ রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়া গ্রামের জিয়ারুল শেখের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে নিরব ছিল বড়।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ জাহেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, লোক মারফত খবর পেয়ে পদ্মা নদীর কোল থেকে অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মরদেহটি অনেকটা গলে যাওয়ায় আঘাতের কোনো চিহ্ন বোঝা যাচ্ছে না। মরদেহের কোমড়ে শিকল দিয়ে একটি ভারি বস্তা বাঁধা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার পর মরদেহ নদীতে ডুবিয়ে দিতেই হত্যাকারীরা এ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিরবের বাবা জিয়ারুল শেখ বলেন, ‘তিন বছর আগে নিরবের মা তাসলিমা বেগম মারা যায়। মায়ের মৃত্যুর পর নিরব মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়ে। নবম শ্রেণিতে উঠে পড়ালেখা বাদ দেয় সে। এরপর সে মাঝে মাঝে ঢাকায় গিয়ে চায়না দুয়ারি (মাছ ধরার ফাঁদ) বানানোর কাজ করতো। এক মাস আগে সে বাড়ি আসে। বাড়িতে সে কোনো কাজকর্ম করতো না। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দিনগত রাত ৮ টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে সে বাড়ির পাশের মাধবপুর বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। এরপর আর সে বাড়ি ফিরে না আসায় আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পাশাপাশি ফেসবুকে নিরবের ছবিসহ নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেই।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অপরিচিত একটি মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে বলে, তোর ছেলে আমার কাছে আছে। যদি ২০ লাখ টাকা দিস তাহলে তোর ছেলেকে জীবিত অবস্থায় ফেরত পাবি। নাহলে তোর ছেলেকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবো। এরপর থেকে ওই নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। শনিবার (২২ মার্চ) আমি এ ঘটনায় কালুখালী থানায় জিডি করি। রোববার (২৩ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে সালেপুর এলকার পদ্মা নদীর কোলে স্থানীয়রা একটি লাশ ভাসতে দেখে আমাকে খবর দেয়। আমি গিয়ে আমার ছেলের লাশ শনাক্ত করি।’
জিয়ারুল বলেন, আমার নিরব বাজারের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিল নিরবে। আজ নদীতে শতশত মানুষের মাঝে পাওয়া গেল তার লাশ।
নিরবের ফুপু মোমেনা খাতুন বিলাপ করে বলেন, ‘আমাদের জানা মতে আমার ভাতিজার সাথে কারো কোন দ্বন্দ্ব ছিল না। আমরা আমার ভাতিজা হত্যার বিচার চাই।’