ঢাকা
৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৪:০৮
প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫

জাতিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে না ফেলে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: মির্জা ফখরুল

বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আপনারা জাতিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে না ফেলে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। নির্বাচনী রোড ম্যাপ দিন। অস্থিতিশীল বাংলাদেশকে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে স্থিতিশীল করতে হবে। আপনারা দেশের মানুষের দিকে তাকান। দেশে আর নৈরাজ্য সৃষ্টি করবেন না। এগুলো ভালো ফল বয়ে আনবে না, যত দ্রুত সম্ভব আপনারা জাতীয় নির্বাচন দিন।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কুমিল্লার লাকসামে বিএনপির এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

এসময়, মির্জা ফখরুল অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা এমন কোন কথা বলবেন না, যার কারণে জাতি বিভ্রান্তিতে পড়বে। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্বশীল আচরণ করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একটা ফ্যাসিবাদ গোটা বাংলাদেশকে সব কিছু ধ্বংস করে গেছে। এই সরকারকে আমরা সমর্থন দিচ্ছি, যার কারণে তারা কাজ করতে পারছে। এই এলাকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের অত্যাচারে লাকসাম মনোহরগঞ্জের মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম। যেমন দেশ পাওয়ার আশায় আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে তেমন দেশ উপহার দিতে পারেননি। তার মেয়ে শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে এ দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে দিয়েছে। আমাদের পার্লামেন্ট কে ধ্বংস করেছে, নির্বাচন ব্যবস্থা কে ধ্বংস করেছে, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। বিগত নির্বাচন গুলো শেখ হাসিনা রাতের আঁধারে ভোট কেড়ে নিয়েছিল। আর সর্বশেষ ২৪ এর নির্বাচন হয়েছিল ডামি নির্বাচন। তারা নিজেরা নিজেরা এই নির্বাচন করেছিল। ধ্বংস হওয়া বাংলাদেশকে পুনরায় ফিরে পেতে আমাদের নেতা তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছে। তিনি স্লোগান দিয়েছিলেন টেক বেক বাংলাদেশ, ফয়সালা হবে রাজপথে।

তিনি আরো বলেন, এখন আবার নতুন নতুন একটা ব্যাপার শুরু হয়েছে। যা কিছু আছে সব নষ্ট হয়ে যাক, একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হোক। দেশ আবার একটি নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে চলুক। সরকার সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন বানিয়েছে। সাধারণ মানুষ সংস্কার বুঝে না। মানুষ বুঝে দুই বেলা দুই মুঠো ভাত, মোটা কাপড় আর মাথায় ছাদ। এই জিনিসগুলো নিশ্চিত করার নামই হচ্ছে সংস্কার। সুতরাং সংস্কার সংস্কার করে দেশে আর অরাজকতা করার চেষ্টা করবেন না। দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আমরা চাই এ সরকার সফল হয়ে সফলতার সঙ্গে তারা একটি নির্বাচন দিক। আমরা জানি এখন যে ব্যবস্থা রয়েছে, সেই ব্যবস্থা আমাদের দেশে খুব একটি শান্তি আসবে না।

এসময় বিএনপির মহাসচিব লাকসামে গুম হওয়া বিএনপি নেতা হিরু-হুমায়ুনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, হিরো হুমায়ুন গুম হওয়ার পরে তার ছেলেরা যখন আমাদের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সেই দৃশ্য বলার মত নয়। এই শিশুগুলো তার পিতাকে পায়নি ছোটবেলায় এবং আজও তারা পায়নি। হিরু হুমায়ুনের মতো আমাদের ৭০০ নেতা কর্মীকে গুম করা হয়েছিল। আজ পর্যন্ত তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, সর্বশেষ ২৪ এর আন্দোলনে প্রায় ২০০০ মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এরমধ্যে আমাদের বিএনপি'র প্রায় ৮০০ নেতা কর্মী ছিল।

এসময় বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, জিয়াউর রহমান আমাদেরকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ উপহার দিতে চেয়েছিলেন। আর আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কখনো অন্যায়কে মাথা নত করেননি। আমাদের নেত্রী গৃহবন্দীকে বরণ করে নিয়েছিলেন কারণ তিনি হাসিনার সেই নির্বাচনকে মেনে নিতে পারেননি।

নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা বলতেছি তাড়াতাড়ি একটা নির্বাচন দেন। এটা বলতেছি কারণ যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন হবে তত তাড়াতাড়ি একটা সরকার ব্যবস্থা তৈরি হবে। যে সরকারের পেছনে জনগণ থাকবে। আর যদি জনগণ না থাকে তাহলে তো তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারবে না। সরকার যত বড়ই হোক এর পেছনে জনগণ থাকতে হবে। আমরা সেই কারণে বলেছি আর কাল বিলম্ব না করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তার জন্য যতটুকু পরিবর্তন করা দরকার, যতটুকু সংস্কার করা দরকার সেইটুকু করুন। পুলিশ প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এগুলোকে সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনী রোড ম্যাপ দিন।

এসময় মহাসমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু৷বিশেষ বক্তা ছিলেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আনোয়ারুল আজীম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহবায়ক উদবাতুল বারী আবু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আমীরুজ্জামান আমীরসহ কেন্দ্রীয় বিএনপি ও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

এর আগে সকাল থেকেই জনসভা'কে কেন্দ্র করে লাকসামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা ভীড় করেন লাকসাম স্টেডিয়ামে। এসময় স্টেডিয়াম মাঠে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।

প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮, মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1840 474666 +880 1736 786915, 
+880 1300 126 624, ইমেইল: online.bdsangbad@gmail.com (online), news.bdsangbad@gmail.com (print), ads.bdsangbad@gmail.com (adv) 
বাংলাদেশ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram