গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মৃতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে মৃতের স্বামী, শশুর ও শাশুড়ীর বিরুদ্ধে তাকে হত্যার অভিযোগ তুলে মৃতের পিতা বাদী হয়ে থানায় এজাহার দাখিল করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দিবাগত রাতে গজঘন্টা ইউনিয়নের জয়দেব এলাকায়।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের পশ্চিম মান্দ্রাইন এলাকার আউয়াল হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তার এর সাথে গজঘণ্টা ইউনিয়নের জয়দেব এলাকার মাহবুবর রহমানের পুত্র মুশফিকুর রহমান সোহাগের পারিবারিকভাবে দু-বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের পিতা ১ লক্ষ নগদ টাকাসহ আরো সমপরিমাণ টাকার কাপড়সহ আসবাবপত্র উপহার সামগ্রী দেয়। কিন্তু যৌতুক লোভী স্বামী এতে সন্তুষ্ট না হয়ে বিয়ের ৬ মাস পার না হতে আবার যৌতুকের জন্য শারিমনের উপর নির্যাতন চালায়। উপায় না পেয়ে শারমিন বাবার বাড়ি চলে যায় এবং আদালতে মামলা করে। মামলা চলাকালে সুচতুর স্বামী সোহাগ আর যৌতুক চাবেনা ও নির্যাতন করবেনা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপোষ করে স্ত্রী শারমিনকে ঘরে তুলে নেয়। আবার কিছু দিন যাওয়ার পর যৌতুকের জন্য নানাভাবে চাপ দেয় ও নির্যাতন করে স্বামী সোহাগ। গত শনিবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে শারমিনের পরিবারকে স্বামী সোহাগের বাড়ি থেকে ফোনে জানানো হয় শারমিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শারমিনের বোন আরফিনা, চাচাতো ভাই সেলিম রানা, বড় আব্বা আবদার রহমান জানান, আমরা সংবাদ পেয়ে এসে দেখি পুলিশ যেয়ে ঝুলন্ত মৃতদেহ নামিয়েছে। শারমিনকে তার স্বামী, শশুর ও শাশুড়ী যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতো। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের তীর ঝুলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার প্রচারণা চালাচ্ছে।
শারমিনের পিতা আউয়াল হোসেন বলেন, বিয়ের সময় আমার সাধ্যমত নগদ টাকাসহ অন্যান্য সামগ্রী দিলেও তারা যৌতুকের জন্য মেয়েকে নির্যাতন করতো। এ জন্য আদালতে মামলা করা হয়েছিলো। পরে বিষয়টি আপোষ হয়। তবে তাদের আসল চেহারা বুঝতে পারি নাই বলে আজ আমার মেয়ের জীবন দিতে হলো। যৌতুক লোভী স্বামী, শশুর ও শাশুড়ী হত্যা করে মেয়েকে ঝুলিয়ে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার অপপ্রচার চালায়। আমি মেয়ে হত্যার এজাহার থানায় দাখিল করেছি।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আল এমরান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।