কুমিল্লা প্রতিনিধি: ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল একঝাঁক চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে কুমিল্লার লালমাই থানা। এটি কুমিল্লার ১৮তম থানা এবং দেশের ৬৫১তম থানা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই থানা এলাকার অসংখ্য চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন সহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে কর্মকর্তারা। থানার ৯টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম লালমাই থানার আওতাধীন। বর্তমানে এ থানায় জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় পুলিশি কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে থানাটি। এছাড়াও থানার নেই নিজস্ব ভবন। ভাড়াকৃত ভবনে চলছে কার্যক্রম। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় নানামুখী সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুরুতে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘেঁষে ফতেহপুর মৌজায় অস্থায়ী ভাড়াকৃত দ্বিতল ভবনে থানার কার্যক্রম শুরু হয়। গত বছরের শেষের দিকে ভবনটি সেখান থেকে সরিয়ে জামতলি নতুন ভাড়াকৃত ভবনে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে প্রয়োজনের অর্ধেক জনবল দিয়েই চলছে থানার পুলিশি কার্যক্রম। এ থানায় কমপক্ষে ৪২ জন সদস্য থাকার পরিবর্তে রয়েছে মাত্র ২৮ জন।
এ থানায় ৬জন উপপরিদর্শক (এসআই) এবং ৬জন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) থাকার কথা। কিন্তু থানায় মাত্র ৩জন উপপরিদর্শক এবং ৩জন সহকারী উপপরিদর্শক রয়েছে। এছাড়াও কনস্টেবল থাকার কথা ৩০জন রয়েছে মাত্র ২২জন। যে কারণে স্বল্প সংখ্যক পুলিশ সদস্য দিয়ে থানা এলাকার ৯টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিঘ্ন ঘটছে। একটি মাত্র সরকারি গাড়ি দিয়ে থানার এলাকায় প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হওয়ায় ভাড়া করা সিএনজিযোগে পুলিশ সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে (ফাঁড়ি) একটি পুরনো সরকারি গাড়ি থাকলেও সেটিও সম্পূর্ণ চলাচলের অনুপযোগী।
এ বিষয়ে লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম বলেন, আসলে গত ৫ আগস্টের পরে বদলিজনিত কারণে থানায় অফিসারসহ প্রয়োজনীয় ফোর্সের কিছুটা সংকট থাকলেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে সবাইকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ যথেষ্ট কাজ করছে। তাছাড়া আমি নিজেই প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়ক এবং কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কে টহল দেই এবং ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাই প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক করে যাচ্ছি।
জনবল সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দক্ষিণ সার্কেল) এমরানুল হক মারুফ বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত আছি। মূলত বদলিজনিত কারণে থানায় পুলিশের সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা এটা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছি, নতুন পোস্টিং হচ্ছে। শীঘ্রই এ শূন্যতা কেটে উঠবে ইনশাআল্লাহ।