আজ ৩ ডিসেম্বর, ঠাকুরগাঁও পাকহানাদার মুক্ত দিবস। ইতিহাসের এই দিনটি জেলাটিতে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। কারণ দীর্ঘ ৯ মাস সংগ্রাম ও লক্ষ প্রাণের আত্মত্যাগে ১৯৭১ এর এইদিনে ঠাকুরগাঁও শত্রুমুক্ত হয়। দিনটির গুরুত্ব ধরে রাখতে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কার্যক্রম পালন করে আসছে। দিনটির তাৎপর্য সংরক্ষণের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারগুলোকে সরকারি সহযোগিতাসহ নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানোর দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ সচেতন সমাজ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবোধ রায় জানান, ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর ভয়াল থাবা থেকে বাঁচতে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিযোদ্ধারা গড়ে তুলেছিল দুর্বার প্রতিরোধ। ১৫ এপ্রিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাক হানাদাররা ১০টি ট্রাক ও ৮টি জিপে করে গুলিবর্ষণ করতে করতে ঢুকে পড়ে ঠাকুরগাঁও শহরে।
ঠাকুরগাঁওকে শত্রুমুক্ত করতে ২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পঁচিশ মাইল নামকস্থানে হানাদার বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড হামলা চালালে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় পাকবাহিনী। প্রায় ২৫ হাজার প্রাণের বিনিময়ে ৩ ডিসেম্বর ভোরে ঠাকুরগাঁও শত্রুমুক্ত হয় এবং ঠাকুরগাঁও শহরে বিজয়ের পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু এখনও নতুন প্রজন্মসহ বেশিরভাগ মানুষ ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানে না।
তাই জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষরণ করা না গেলে আগামীতে হয়তো এটি চাঁপা পড়ে থাকবে। আর এ প্রজন্ম কখনো জানতেও পারবে না এর সঠিক ইতিহাস। তাই এখনি সরকারিভাবে শহীদ পরিবারগুলোকে সহযোগিতা ও ইতিহাস সংরক্ষণের যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার দাবি জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।