জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার প্রতিনিধি: সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির প্রভাবে কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে আছেন কয়েক লাখ মানুষ।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, পেকুয়া ও মহেশখালীতে গত দুদিনে পাহাড় ধসে ৪ জনসহ ৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করা লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন।
গেল শনিবার রাত থেকে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরে অর্ধশতাধিক ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) ভোর থেকে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কে ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদের গণি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ঝড়ো হাওয়ায় ২০টি বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। তা সরানোর কাজ চলছে।
এদিকে, মহেশখালীতে পাহাড় ধসে আব্দুস শুক্কুর (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে তার মেয়ে মোস্তফা খানম (২০)। সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার কালারমারছড়ার ঝাপুয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আর সোমবার বিকালে সৈকতের সীগাল পয়েন্ট থেকে সেলিম নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সেলিম উখিয়ার রেজুখাল এলাকার বাসিন্দা। সদর থানার ওসি রকিবুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত সেলিমের স্বজন হুমায়ুন বলেন, দুইদিন আগে তারা চার ভাই একসঙ্গে শখের বশে মাছ শিকারে গিয়েছিল। এ সময় স্রোতের টানে সেলিম তলিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার মরদেহ পাওয়া যায়নি। পরে ফেসবুকে ছবি দেখে মরদেহটি শনাক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার সকালে পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের সেগুনবাগিচা এলাকায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- একই এলাকার দুবাই প্রবাসী সরওয়ার কামালের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৪০), মেয়ে ময়না আকতার (১২) ও নাতি আবু তোহা (৮)।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় আরও ১৯৪ মিলিমিটার। আরও ২ থেকে ৩ দিন ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে তিনি জানান।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। এতে গত দুদিনে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মুহূর্তে যারা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করছেন তাদের সরিয়ে নিতে কাজ চলছে। সকলকে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে।