জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি: বিয়ের ১১মাসের মধ্যে ঢাকায় বুকে বুলেট বিদ্ধ হয়ে সোনাগাজীর বীমা কর্মকর্তা আবদুল গণি বোরহানের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে তাকে।
নিহত বোরহানের বড় ভাই আমানত উল্যাহ জানান, সন্ধ্যানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ঢাকা বাংলা মোটর শাখার আইটি কর্মকর্তা ছিলেন বোরহান। চার ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল তৃতীয়। বাড়িতে ১০ দিন ছুটি কাটিয়ে গত শনিবার আন্দোলনের মধ্যেই অফিসের কাজে ঢাকায় চলে যান তিনি। রোববার ৪ আগস্ট অফিসের কাজ শেষ করে বাংলামোটর জামে মসজিদের সামনে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন তিনি। বিকাল চারটার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বোরহান। উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ময়না তদন্ত শেষে সোমবার সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। তার নববিবাহিত স্ত্রী সহ আত্মীয়স্বজনরা হাইমাউ করে কাঁদতে থাকেন। রাত নয়টায় সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা। দ্বিতীয় জানাজা মনগাজী বাজারে শেষ করে তাকে পারিবারিক কবরাস্থানে দাফন করা হয়। ১১ মাস পূর্বে সোনাগাজী কামিল মাদরাসার ফাজিল শ্রেণির ছাত্রী এবং চরচান্দিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বড়ধলী গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন বোরহান।
সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের ছাড়াইতকান্দি গ্রামের মৃত মাস্টার আহসান উল্যাহ ছেলে আবদুল গণি বোরহান। ছোট বেলা থেকে মেধাবি ছাত্র ছিল সে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেন সে। স্থানীয়ভাবে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এমন একজন মেধাবী যুবক ও বিশ্বস্ত একজন কর্মী হারিয়ে জামায়াতের নেতারাও হয়ে পড়েছেন হতবিহবল। শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে জেলা ও উপজেলা নেতারা ছুটে যান বোরহানের বাড়িতে। কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলে শরীক হন তারা।