এস এম আকাশ, ব্যুরো প্রধান, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বাহামানিয়ান নাগরিক মিসেস স্টাসিয়া শান্তে রোলি ৩ দশমিক ৯ কেজি কোকেন নিয়ে ধরা পড়ে সোমবার। আটক কোকেন দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল থেকে দুবাইসহ একাধিক দেশ ঘুরে চট্টগ্রামে পৌছে। এরআগে চট্টগ্রাম বন্দরে ১০৭টি ড্রামে সূর্যমুখী তেলের সঙ্গে মিশিয়ে আনা কোকেনের চালান ধরা পড়ে। সেখানে এক-তৃতীয়াংশই ছিল তরল কোকেন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে আন্তর্জাতিক মাদক কারবারিরা কি চট্টগ্রামকে কোকেন পাচারের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে।
গত ১৩ জুলাই চট্টগ্রামে পাচার হয়ে আসা কোকেনের এ বড় চালানের পেছনে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী চক্র জড়িত থাকার বিষয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ডিবি পুলিশ ও এপিবিএন নিশ্চিত হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম মেট্রো (দক্ষিণ) উপপরিচালক রাজিব মিনা বলেন, আন্তর্জাতিক কোকেন চোরাকারবারিচক্র বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বহিনীকে এড়ানোর জন্য ঢাকার বিমানবন্দরের পরিবর্তে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর বেছে নিয়েছিল। তিনি জানান, মাদক চোরাচালানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্র। এই চক্রে আটলান্টিক মহাসাগরীয় দেশ বাহামা, আফ্রিকার নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, মালাউর, লাতিন আমেরিকার দেশ পেরু, ইউরোপের স্পেন ও বাংলাদেশি কয়েকজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে কোকেনের ব্যবহারকারী নেই। তাদের ধারণা, এই কোকেন অন্য কোনো দেশে পাচারের চেষ্টা ছিল। এর আগে বাংলাদেশে কোকেনের যে চালানগুলো ধরা পড়েছিল তার প্রায় সবই এসেছিল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে, গন্তব্য ছিল ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা।
স্টাসিয়া শান্তে রোলি বাংলাদেশ মিশন: ৮ জুলাই ব্রাজিলের সাও পাওলো থেকে রওনা দেন স্টাসিয়া শান্তে রোলি। ১২ জুলাই তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পৌছে। ১৩ জুলাই চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে আসেন। বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম শেষ করে তিনি চট্টগ্রামে প্রবেশও করেন। ১৫ জুলাই আবার তিনি বিমানবন্দরে আসেন তার লাগেজ নিতে। তবে আগে থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে তাকে নজরদারিতে রাখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। পরে ব্যাগেজ তল্লাশি করে ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম ওজনের কোকেন জব্দ করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক দেওয়ান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, রোলীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আরও দুই নাইজেরিয়ানকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে পরে সংশ্লিষ্টদের এই মামলায় অধীনে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর আইনের আওতায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডিএনসি সূত্র জানায়, এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে ১০৭টি ড্রামে সূর্যমুখী তেলের সঙ্গে মিশিয়ে আনা কোকেনের চালান ধরা পড়ে। সেখানে এক-তৃতীয়াংশই ছিল তরল কোকেন।