জিহাদ রানা, বরিশাল ব্যুরো চীফ: সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের দাবি আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। আন্দোলনকারীরাও তাদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস দখলে নিয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর সোয়া দুইটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের হামলা ও আন্দোলনকারীদের পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর ২টার পর আন্দোলনকারীরা কলেজের ক্যাম্পাস দখলে নেয়। তারা লাঠিসোটা নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
তবে ঘটনাস্থলে থাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. ফজলুল করিম জানিয়েছেন, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন তিনি।
বিএম কলেজের প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, সকালে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে তারা মিছিল বের করলে বিএম কলেজ এসএম সাউদের নেতৃত্বে কথিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় অবস্থান নেওয়া কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কিছু অংশ লাঠিসোটা নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকে। তারা ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেওয়া কথিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসে গিয়ে অবস্থান নেয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরাও ওই হলের সামনে অবস্থান নেয়। এর কিছু সময় পর পুরো ক্যাম্পাস দখলে নেয় কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারীরা। উপায় না পেয়ে ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থান নেওয়া কথিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে।
কথিত ছাত্রলীগ নেতা এসএম সাউদ জানান, তারা ক্যাম্পাসের অবস্থান করছিলেন। এ সময় কোটা আন্দোলনকারীরা এসে হামলা করেছে। এতে তাদের কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে তাদের নাম জানাতে পারেননি সাউদ।
বিএম কলেজ শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আমরা আন্দোলন শুরু করার পরপরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের হামলা করে। আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তিনি জানান, আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বরিশাল সদর হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, তাদের হাসপাতালে কোনো শিক্ষার্থী চিকিৎসা নেননি। তবে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েকজন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।