ঢাকা
৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৯:৩১
প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫

২০ শতাংশ নিম্নমানের বই সরবরাহের অভিযোগ ছোট প্রেসগুলোর বিরুদ্ধে

বিগত ১৫ বছর ধরে নিম্নমানের পাঠ্য বই ছাপানোর অভ্যাস এবারও ত্যাগ করতে পারেনি অপেক্ষাকৃত ছোট প্রেসগুলো। নানা ফাঁকফোকর পেরিয়ে প্রায় ২০ শতাংশ নিম্নমানের পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে সব উপজেলায় বিতরণকৃত পাঠ্যবইয়ের মান যাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান গতকাল বলেন, প্রথমে প্রেসে কাগজের মান (স্থায়িত্ব ও জিএসএম) ঠিক আছে কি না, তা দেখে ছাড়পত্র দিলেই বই ছাপা হয়। ছাপা হওয়ার পর মান যাচাই করে ফের ডেলিভারি জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এই স্তরকে (প্রিডেলিভারি ইন্সপেকশন) পিডিআই বলে। আর বই পৌঁছার পর প্রত্যেক উপজেলা থেকে বই সংগ্রহ করে সেগুলোর মান যাচাই করতে (পোস্ট ল্যান্ডিং ইন্সপেকশন) পিএলআই এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়। এবার এখনো পিএলআই এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। খুব শিগগিরই পিএলআই এজেন্ট নিয়োগের টেন্ডার দেওয়া হবে। সরবরাহকৃত পাঠ্যবই নিম্নমান প্রমাণিত হলেই সংশ্লিষ্ট ছাপাখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪১টি পাঠ্যবই ছাপানোর আয়োজন করা হয়েছিল। তবে পরে এসে দেখা যায়, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি চাহিদা জানানো হয়েছিল। নতুন করে হিসাব করে দেখা যায়, মোট বই ছাপতে হবে আসলে ৩৯ কোটি ৬০ লাখের মতো। এর মধ্যে সাড়ে ৩২ কোটি বই ছাপানো হয়েছে। এখানে ৭ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো বাকি রয়েছে। শিক্ষাক্রম পরিবর্তন, পাঠ্যবই পরিমার্জনসহ কিছু সমস্যার কারণে এবার শিক্ষা বিভাগ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, বই পেতে কিছুটা দেরি হবে। তবে যে এত দেরি হবে—সেটা অনেকের ধারণা ছিল না। দরপত্র, অনুমোদন, চুক্তির মতো কাজগুলোও যথাসময়ে না করায় এবং কাগজের মূল্য বৃদ্ধি, কৃত্রিম সৃষ্টি ও আর্ট কার্ডের সংকটের কারণে আরও বেশি দেরি হচ্ছে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে, আগামী এপ্রিলের আগে সব বই পাবে না শিক্ষার্থীরা। গত বারের চেয়ে এবার কাগজের পুরুত্ব ও উজ্জ্বলতা বাড়ানো হয়েছে। গত বছর কাগজের পুরুত্ব ছিল ৭০, আর উজ্জ্বলতা ছিল ৮০। এ বছর কাগজের পুরুত্ব ৮০ এবং উজ্জ্বলতা ৮৫ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বার্স্টিং ফ্যাক্টর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১৬। জানা গেছে, প্রিডেলিভারি ইন্সপেকশনে নিম্নমানের কাগজে ছাপানো ৭ লাখ পাঠ্যবই কেটে ফেলা হয়েছিল।

এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা প্রথমে সব শ্রেণির তিনটি বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) বই দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এরপর এসএসসি পরীক্ষার্থী হিসেবে দশম শ্রেণির বই ছাপার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপার কাজ প্রায় শেষ। এখন নবম শ্রেণিসহ মাধ্যমিকের অন্যান্য শ্রেণির অবশিষ্ট বই ছাপায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

যদিও এর আগে পাঠ্যবই ছাপার কাজটা যুদ্ধের মতো হয়েছে বলে জানিয়ে ঠিক কবে নাগাদ সব বই ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া যাবে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে অপারগতা জানিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলছেন ১৫ জানুয়ারি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলছেন ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই দেওয়া যাবে। আমি কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো কমিটমেন্ট দেব না। পাঠ্য বই কবে ছাপা শেষ হবে, তা নিয়ে আমি কিছু বলব না। বই ছাপার প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে কিছু কথা বলব। আমি মনে করি, পাঠ্যবই ছাপার কাজটা এবার শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের মতো হয়েছে।

এনসিটিবির একজন সদস্য বলেন, এবার প্রেস মালিকদের ক্যাপাসিটি অ্যাসেসমেন্ট করা হবে। তারা তাদের সক্ষমতার বরণ এনসিটিবিকে দেওয়ার পর এটি করা হবে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, প্রেস মালিকরা দাবি করছেন, তার চারটি মেশিন আছে। কিন্তু কয়টি ফাংশন করছে সেটি আমরা জানছি না। আবার তার ছাপার সক্ষমতা থাকলেও বাঁধাইয়ের সক্ষমতা আছে কী না, সেটিও দেখা হবে। তিনি জানান, এবারও প্রেস মালিকদের বই বাঁধাইয়ের জন্য শ্রমিক দিতে হয়েছে। এসব বিড়ম্বনা আগামীতে আর পোহাবে না বোর্ড। ভবিষ্যতে প্রেসের সক্ষমতা অনুযায়ীই দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পাবেন ব্যবসায়ীরা।

প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮, মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1840 474666 +880 1736 786915, 
+880 1300 126 624, ইমেইল: online.bdsangbad@gmail.com (online), news.bdsangbad@gmail.com (print), ads.bdsangbad@gmail.com (adv) 
বাংলাদেশ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram