লাল-সবুজের একটা পতাকা মানেই তো গোটা বাংলাদে। দেশপ্রেমের নিপুণ আচড়ে বছরজুড়ে পতাকা তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন কারিগরা। আর্থিক লেনদেন ছাড়িয়ে তাদের কাজে মিশে থাকে, দেশপ্রেম আর প্রগাঢ় মমতা। কেবল, এক জুলাই বিপ্লবেই বিক্রি হয়েছিল তাদের বানানো ৫ লাখ পতাকা।
রক্তের দামে কেনা স্বাধীন পতাকা জানান দেয় দৃঢ় চিত্তে গোটা বাংলাদেশের নাম। অন্ধকার ভেদ করে আলোকর্বতিকা হয়ে সর্গবে দাঁড়িয়ে থাকে প্রতিনিয়ত।
ডিসেম্বর এলে বাঙালি তার হৃদয়ে ধারণ করা পতাকার সাথে সম্পর্কটা আবার ঝালাই করে নিতে পারে। একখন্ড লাল সবুজ ঘরে নিয়ে যাওয়ার উপলক্ষ এনে দেয় এই বিজয়ের মাস। প্রায় প্রতিটি পরিবারের সেই আনন্দকে বর্ণিল করতে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন পতাকা তৈরীর কারিগরেরা।
হাতের পরম মায়ায় যারা লাল সবুজকে আগলে রেখে দেশের প্রতিচ্ছবি সৃষ্টি করেন। তাদের কাছে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাতেই থাকে স্বাধীন বাংলার পতাকা । তেমনই একজন কামাল আহমেদ। যিনি গত ২৫ বছর ধরে কেবল পতাকা বানানোর কাজই করেন। ব্যস্ত এই রাজধানীর বুকে যেখানে পতপত করে উড়ে এ দেশের অস্তিত্ব, তার অধিকাংশই কামালের কারখানার তৈরি পতাকা।
পতাকা কারিগর মো.কামাল বলেন, ছোটবেলায় স্কুলে ১৬ ডিসেম্বর, ২১ শে ফ্রেবুয়ারি অনুষ্ঠানগুলোতে সবার হাতে পতাকা দেখে ভাল লাগতো। কোথায় কিভাবে পতাকা বানায় এটা মাথায় ঘুরতে থাকে। এরপর চিন্তা করলাম নিজে পতাকা বানায় বিক্রি করতে পারি কি না। আন্দোলনে কতগুলো পতাকা তৈরি করেছি সেটা মনে নেই। কিন্তু মাথায় বাঁধা পতাকা লাখের ওপর তৈরি করেছি।
সর্বশেষ গণঅভুত্থানে এই কারখানার পতাকা যোদ্ধারাই করেছেন দিন রাত পরিশ্রম। নাওয়া-খাওয়া ভুলে শুধু জুলাই মাসেই তৈরী করেছেন বিভিন্ন আকারের পাঁচ লক্ষাধিক পতাকা।
কারখানাটির এক কারিগর বলেন, আন্দোলনের সময় বিভিন্ন সাইজের পতাকা তৈরি করেছি। তবে সবচেয়ে চাহিদা ছিল মাথায় বাঁধা পতাকা।
বিজয়ের মাসে পতাকার কেনাবেচা হয়তো বাড়ে তবে নতুন প্রজন্মের কাছে তার মাহাত্ম আজীবন সুউচ্চ শ্রদ্ধায় থাকবে এমন প্রত্যাশা বাঙালির। কারণ এ পতাকায় লেখা আছে লাখো শহীদের আত্মত্যাগ আর গোটা দেশের জন্মের আত্নকাহিনী।