বৃষ্টির পর তীব্র গরম, এডিস মশার জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক পরিবেশ। এই আবহাওয়ায় ডিম থেকে একটি পরিণত এডিস মশা জন্মাতে মাত্র সাতদিন সময় লাগে। এমনটা চলতে থাকলে মাস কয়েকের মধ্যেই দেশে ডেঙ্গুর পিক সিজন শুরু হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পিক সিজনে নয় মশক নিধন কার্যক্রম এখনই জোরদার করা দরকার। তবে মশা নিধনে ফগিং পদ্ধতি এখন আর কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারছে না।
সরজমিনে রাজধানীর আগারগাঁও কলোনি ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার ড্রেনে নানা প্রজাতির মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। দিন-রাত মশার উৎপাতে এলাকাবাসীর জীবন যেন ওষ্ঠাগত। এই পরিবেশে প্রতি সাতদিনে মশন নিধন কার্যকম চালানোর প্রয়োজন থাকলেও অনেকদিন ধরে সেখানে ওষুধ ছিটানো হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, কয়েল ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করেও মশার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না তারা। এমনকি দিনেও মশারী টানিয়ে থাকতে হয়। অনেকদিন পর পর সিটি করপোরেশন থেকে ওষুধ ছিটানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেছেন, ফগিং পদ্ধতিতে মাঠ পর্যায়ে মশা নিধন হয় না। এই পদ্ধতিটি এখন আর কার্যকর নয়। এখন থেকেই সিটি করপোরেশনগুলোকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদার করার পরামর্শও দেন তিনি।
এদিকে, ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনায় আগারগাঁও মূল সড়কের একটু ভেতরের এই কলোনিটিতে সারাবছর ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত নানা রোগ লেগে থাকে।
গত বছর এই সময় থেকেই হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করে। প্রতিবছরই ডেঙ্গুর সিজনে প্রস্তুতি আছে বলে জানায় দুই সিটি করপোরেশন। অথচ শেষে ডেঙ্গুর প্রকোপ মোকাবেলায় ব্যর্থতার প্রমাণ মেলে। এবছর এর মধ্যে ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হলেও মাঠ পর্যায়ে মশক নিধনের কোনও কার্যক্রমই চোখে পড়ছে না। তবে এবারও প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন। তবে প্রতিবার তাদের ব্যর্থতার মূল কারণটি কী?
এ বিষয়ে ডিএসসিসি’র প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেছেন, অতীতে মশা নিধনের ওষুধ নিয়ে অনেক কেলেংকারী হয়েছে। এরইমধ্যে ওষুধ কেনা হয়ে গেছে। এখন ওষুধ ছিটানো ও তদারকি করা বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিয়ে বাধ্য হয়েছি।
ডেঙ্গুর পিক সিজনে প্রতিকার নয়, প্রতিরোধ গড়তে হবে। সেই সাথে কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নিজেদেরকেও সচেতন হতে হবে। বাড়ির আশপাশে পানি জমতে দেয়া যাবে না ও আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। তবেই রাজধানীতে ডেঙ্গু ও মশার উৎপাত কমবে।
উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের মধ্যে মারা যান ৫৭৫ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি ছিল।