পূর্বাচল, ঢাকার মধ্যে আরেক ঢাকা। কথা ছিলো, আধুনিক সব নাগরিক সুবিধা মিলবে এই উপশহরে। কিন্তু সেটি কথাই থেকে গেছে, বাস্তবায়ন হয়নি এখনো।
রাজধানীর উপর চাপ কমাতে প্রায় ছয় হাজার একর জায়গা নিয়ে শুরু হয় পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কাজ। ১৯৯৫ সালে শুরু হয়ে শেষ হবার কথা ছিলো ২০১৩ সালের জুনে। তারপরও প্রায় এক যুগ পর কয়েকটি নির্মানাধীনসহ বাড়ি উঠেছে মাত্র দেড়শ’র মতো।
রাজউকের পরিকল্পনায় এই প্রকল্পে ৩০টি সেক্টরে আবাসিক প্লট হবে ২১ হাজার। গেলো ২৮ বছরে প্রকল্পের নকশা বদলের সঙ্গে দফায় দফায় মেয়াদ বাড়ায় অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তায় আছেন গ্রাহকরা।
সরেজমিনে এসব অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। পানি সরবরাহই নিশ্চিত করা যায়নি অন্তত ৬০ ভাগ এলাকায়। নেই পয়:নিষ্কাষন, নিরাপত্তার, হাসপাতাল বা বাজারঘাট।
একটি পরিকল্পিত উপ-শহর প্রকল্পের ধীরগতির জন্য পুরো দায়ভার রাজউককে দিতে চান নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলছেন, একদিকে, প্রকল্পের কাঙ্খিত অবকাঠামোগত উন্নয়নে ধীরগতি। অপরদিকে, বেসরকারি আবাসন কোম্পানিগুলো তাদের প্রকল্পগুলো অনেকদূর এগিয়ে নিচ্ছে। দুইয়ে মিলে হতাশা ভর করেছে এই প্রকল্পের গ্রাহকদের মধ্যে।
নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, কেন্দ্রীয় ঢাকার উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ না করার কারণে পূর্বাচল ও ঢাকার মাঝে পরিপূর্ণ অনেক ধরনের আবাসন হলো। তবে পূর্বাচল ঠিক আগের মতোই পড়ে রয়েছে। এই প্রজেক্ট এখন সরকারের জন্য এক ধরনের বোঝা হয়ে গিয়েছে। বলা যায়, পূর্বাচলে এখন পর্যন্ত যে ইনভেস্টমেন্ট, সে তুলনায় রিটার্ন জিরো।
তবে এমন বাস্তবতার মাঝেও পূর্বাচল প্রকল্পের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা আগামী জুনের মধ্যে নিশ্চিত করার বিষয়ে আশবাদি প্রকল্প পরিচালক।
পূর্বাচল প্রকল্প পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, খুব দ্রুতই বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। এছাড়াও রাস্তা-ঘাট, পার্ক, খেলার মাঠ, স্কুল ও মসজিদ আগামী জুনের মধ্যে করে দেয়া হবে। অন্যদিকে, মানুষ যাতে নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করতে পারে, সে লক্ষ্যে পুলিশ ফাঁড়ি করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তবে, প্রায় ত্রিশ বছরেও এই প্রকল্প কেন বাস্তবায়ন করা যায়নি তা তদন্তের দাবিও করেছেন নগর পরিকল্পাবিরা।