বর্তমান সময়ে আলোচিত ‘রাসেলস ভাইপার’ সাপ নিয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের তরফ থেকে যে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার বিকালে গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত ২০ জুন জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ সভায় ‘রাসেলস ভাইপার’ সাপ নিয়ে আলোচনা হয়।
সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ ঘোষণা করেন, যারা রাসেলস ভাইপার মেরে আনতে পারবে, তাদের ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। সেই ভিডিও ভাইরাল হলে একদিন পরই সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পর দিন ২১ জুন এক সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি দেন।
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলী আশরাফ পিয়ার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ জীবিত ধরে আনতে পারেন, তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আগের বক্তব্যটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিকৃত করে প্রকাশ হয়েছে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ ঘোষণার পর ফরিদপুরের বেশ কয়েকজন জীবিত রাসেল ভাইপার সাপ ধরে আনেন পুরস্কারের জন্য। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, বন বিভাগের অনুমতি আনা গেলেই পাওয়া যাবে পুরস্কার। পুরস্কারপ্রাপ্তির জন্য বন বিভাগের গেলে তারা কোনো সার্টিফিকেট দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
এ নিয়ে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের পুরস্কার ঘোষণা করাটাই তো অবৈধ। মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। আমরা এটা প্রমাণ করতে যাব কেন?
এদিকে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের এমন ঘোষণা নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোড়ন শুরু হলে পুরস্কারের ঘোষণা থেকে সরে আসে আওয়ামী লীগ। রোববার জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২০ জুন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তক্রমে রাসেলস ভাইপার সাপ সম্পর্কিত একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী। বিষয়টি বন ও পরিবেশ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, বিধায় জেলা আওয়ামী লীগ সর্বসম্মতভাবে রাসেলস ভাইপার সংক্রান্ত ঘোষণাটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।